Published : 08 Aug 2024, 10:36 PM
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দিনে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন একদল আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার ‘সাধারণ আইনজীবী’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি রেখে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব।
এই বিচারপতিদের ‘বিতর্কিত’ ও ‘দলবাজ’ হিসেবে বর্ণনা করে তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন পদত্যাগ দাবি করা আইনজীবীরা।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যের শুরুতে সৈয়দ মামুন মাহবুব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ নিহতদের স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সাহবুদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং তার ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল।
“কিন্তু গত ৫ অগাস্ট ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের’ প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন জনরোষের শিকার হন। গত ১৫ দিন ধরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশের আদালত ভবন জনগণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, যা গত ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার।”
গত ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি অভিযোগ তুলে মামুন মাহবুব বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের সমস্ত অন্যায় পাপের সহযোগী হয়েছে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ।
“সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ গত ১৫ বছরের সব বিচারপতিকে তিনি ‘দলবাজ’ বলে আখ্যা দেন।”
আইনজীবী সমাজ এই সমস্ত ‘সংবিধান লঙ্ঘনকারী’ প্রধান বিচারপতিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়, বলেন মামুন মাহবুব।
‘রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়?’ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এ উক্তির কঠোর সমালোচনা করেন এই আইনজীবী।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কোটা সম্পর্কিত ওই রিটের আপিল শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি মন্তব্যটি করেছিলেন।
একটি রিট শুনতে ‘অস্বীকৃতি জানিয়ে’ বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেন মামুন মাহবুব।
মামুন মাহবুব সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতিদের পদত্যাগ চেয়ে তাদের স্থানে সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ ও যোগ্য বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সদ্য পদত্যাগকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানসহ ১২ আইনজীবীকে সামাজিকভাবে বয়কট ও অসহযোগিতা করার আহ্বান রাখেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসীন রশিদ, শাহ আহমেদ বাদল, গোলাম রহমান, ইউসুফ আলী, আশরাফুল ইসলাম, ও তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।