Published : 15 Jun 2025, 08:33 PM
বিভিন্ন সংস্কার সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দ্বিতীয় ধাপে কোরবানির ঈদের আগে দলগুলোর সঙ্গে একবার বসলেও চূড়ান্ত আলোচনা শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার থেকে।
বিএনপিসহ ৩০টি দলের সঙ্গে ধাপে ধাপে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই আলোচনা হবে বলে রোববার ঐকমত্য কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির দোয়েল হলে ১৭ জুন সকাল ১১টার দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসবে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে প্রথম ধাপের বৈঠকের অসমাপ্ত বিষয়গুলো নিয়ে ঐকমত্যের জন্য আলোচনা হবে।
“এতে সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, নারী প্রতিনিধিত্বসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে দ্বিমত রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐক্যমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলবে বৈঠক।”
প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে কোরবানির ঈদের আগে ২ জুন দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
গণআন্দোলনে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনগুলো ২০২৫ সালে ফেব্রুয়ারিতে তাদের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন সরকারের কাছে পেশ করে।
পরে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার।
বিভিন্ন সংস্কার সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছানো ও ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা এ ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করা এ কমিশনকে ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
ঐকমত্য কমিশন ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনের প্রিন্ট কপি গত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠায়। এরপর ৫ মার্চ পাঁচটি কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে তাদের মতামতের জন্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ ছিল ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সুপারিশ ছিল ২০টি।
স্প্রেডশিট পাঠানোর পর ১৫ মার্চের মধ্যে মতামত দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানায় ঐকমত্য কমিশন। তবে কিছু দল সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে। পরে মোট ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছ থেকে মতামত পাওয়া যায়। কিছু কিছু দল স্প্রেডশিটে মতামত দেওয়ার পাশাপাশি বিস্তারিত মন্তব্য ও বিশ্লেষণ জমা দেয়।
মতামত পাওয়ার পাশাপাশি ২০ মার্চ থেকে শুরু করে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকটি দলের সঙ্গে একাধিক দিনও বৈঠক চলে। আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য ও আংশিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে আগে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।