Published : 29 May 2025, 09:30 PM
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করেছে, এর প্রভাবে দুইদিন সারাদেশে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার সবশেষ বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এটি স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে সাতক্ষীরা ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল।
এর প্রভাবে এদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ এবং পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, অতি ভারি বৃষ্টির ফলে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।
মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়, যা পরে আরো ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় নিম্নচাপে পরিণত হয়। পরে সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপটি সাতক্ষীরা ও সংলগ্ন এলাকা থেকে আরও উত্তর বা উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে থাকবে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।
সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি
একদিনে মৌসুমের সর্বোচ্চ ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টি নথিবদ্ধ হয়েছে নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে। এছাড়া ফরিদপুরে ১৫৯, কক্সবাজারের টেকনাফে ১৪৭, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১৪৬, মানিকগঞ্জের আরিচায় ১২২, পটুয়াখালীতে ১১৬, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ভোলায় ১১৩ মিলিমিটারসহ প্রায় সারাদেশে বৃষ্টি ঝরেছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমার আভাস এসেছে পূর্বাভাসে।