Published : 16 Oct 2024, 08:53 PM
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনের 'লালন স্মরণোৎসব'।
লালনের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
৮৪ দিন পর গত শুক্রবার থেকে শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন ও মহড়া কক্ষ সীমিত পরিসরে খুলেছে। মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটকের প্রদর্শনী। খোলার পর প্রথমবার নিজেদের অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। প্রথমেই আয়োজন করা হয়েছে লালন উৎসব।
সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “এই উৎসবে সবাইকে আমরা আমন্ত্রণ জানাই। ১৭ অক্টোবর লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস। লালনকে স্মরণ করে তিন দিনের এই উৎসব সবার অংশগ্রহণেই পূর্ণতা পাবে।”
লালন স্মরণোৎসবের মধ্যে দিয়ে রাজধানীতে সাংস্কৃতিক স্থবিরতা কিছুটা কাটবে উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, মহাত্মা লালন সাঁই এর অসাম্প্রদায়িক দর্শন, জাতিভেদ বিরোধী ভাবধারা তরুণ প্রজন্মসহ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুন্থানের কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তার স্বার্থে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার বিভিন্ন কক্ষে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যরা অবস্থান করছেন।
এ কারণে অনুষ্ঠান দেখতে আসা দর্শকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে নিবন্ধন করতে হবে বলে জানান একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠান শুরুর দুই ঘন্টা আগে থেকে প্রবেশ গেইট সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে দর্শকদের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে নিবন্ধন করতে হবে।
“আর সাংবাদিকসহ যারা পেশাগতভাবে এই উৎসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন, তারা অফিস আইডি কার্ড দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন।”
উৎসবে সারা দেশ থেকে গুণি শিল্পীরা অংশ নেবেন বলে জানান একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান।
তিনি বলেন, “কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে গুণি শিল্পীরা অংশ নেবেন উৎসবে। সবার সহযোগিতায় একটা সুন্দর উৎসবে সবাই যুক্ত হতে পারব বলে আশা করছি।”
উৎসবের ব্যয়ের হিসাব ওয়েবসাইটে জানানো হবে বলে জানান একাডেমির মহাপরিচালক।
জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ এবং পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
উৎসবে যা থাকবে
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন হবে।
'আশাসিন্ধু তীরে’ শীর্ষক প্রথম দিনের আয়োজন উদ্বোধন করবেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান।
গানে ও তত্ত্বে ফকির লালন সাঁইকে উপস্থাপন করবেন শিল্পী অরূপ রাহী ও জহুরা ফকিরানী।
দ্বিতীয় দিন
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে আয়োজন করা হবে 'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি' শিরোনামে সাধুমেলা।
স্বাগত বক্তব্য দেবেন শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ জামিল আহমেদ।
তৃতীয় দিন
শনিবার বিকাল ৪টায় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ‘জাতিসত্তার প্রশ্ন এবং বাউল-ফকির পরিবেশনার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান হবে।
স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক আ-আল মামুন।
আলোচনা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, প্রেস ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, নাট্যকার ও গবেষক শাহমান মৈশান। সভাপতি থাকবেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
ওইদিন দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে 'ধরো মানুষ রূপ নেহারে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।
প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। স্বাগত বক্তব্য দেবেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল। আলোচক থাকবেন সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।