Published : 30 Jul 2024, 03:09 PM
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অস্থিরতার ‘স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ’ সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
সোমবার দৈনিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিষয়ে প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমরা আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি।
“এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে আমাদের অবিচল অবস্থান আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি।”
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে ফের আন্দোলনে নামে। ধীরে ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যপ্তি বাড়তে থাকে।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘাতের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। পরদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে ৬ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১৮ জুলাই সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা হয়, সেদিন মাঠে নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। গোটা দেশে নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় সম্পদে হামলা শুরু হয়। প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
রামপুরায় বিটিভি ভবন, মেট্ররেলের দুটি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট।
পরদিন পরিস্থিতির অবনতি হলে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করা হয় সারা দেশে। দুই দফায় তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে পুরো দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় কারফিউ শিথিল করে অফিস-আদালত ও কলকারখানা আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও ট্রেন চলাচল এখনো বন্ধ আছে।
পাঁচ দিন বন্ধ রাখার পর ব্রডব্যান্ড এবং দশ দিন বন্ধ রাখার পর মোবাইল ইন্টারনেট খুলে দেওয়া হলেও ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখা হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ‘কিছুটা পুনস্থাপনের’ বিষয় অবগত থাকার কথা তুলে ধরে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “আমরা ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের পূর্ণ এবং বাধাহীন প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানাচ্ছি।
“এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ, পাশাপাশি আমাদের আমেরিকান নাগরিকরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে প্রবেশাধিকার পাবেন।”
ইন্টারনেট বন্ধ থাকার মধ্যে পৃথিবীর নানা প্রান্তে প্রবাসী বাংলাদেশি ও শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করেছেন। আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য লয়েড ডগেটসহ অনেকে।
বাংলাদেশের বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ও কংগ্রেস সদস্যদের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, “যারা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে চায়, তাদের সব প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি।
“কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রশ্নে, কোনো সুনির্দিষ্ট চিঠিপত্রের বিষয়ে আমি কথা বলছি না, তবে আমাদের কংগ্রেসের সহকর্মীদের যে কোনো প্রশ্নের বিষয়ে আমরা সবসময় ভালোভাবে প্রতিউত্তর দেব।”