Published : 07 May 2025, 01:35 PM
রাজধানীর গুলশান থানার ভ্যান চালক জব্বার আলী হাওলাদার হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারের আদেশ পেয়ে ‘গান বাংলা’ টেলিভিশন চ্যানেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস আদালতকে ‘ধন্যবাদ জানিয়েছেন’।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার ঢাকার ঢাকার মহানগর হাকিম জি.এম. ফারহান ইশতিয়াক তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আব্দুস সালাম তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাপসকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে হাজতখানা থেকে তাপসকে আদালতে তোলা হয়। এসময় হাসিখুশিই দেখা গেছে তাপসকে।
তাপসকে আদালতে তোলার পর গুলশান থানার এই হত্যাচেষ্টা মামলার শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সালাম বলেন, “মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে কৌশিক হোসেন তাপসের নাম এসেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রার্থনা করছি। গ্রেপ্তার দেখানো হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।"
এরপর ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “গান বাংলার তাপস ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী ছিলেন। তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।"
শুনানি শেষে বিচারক তাপসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেওয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা তাপস ‘বিরক্তির সুরে তিনবার বলেন, ধন্যবাদ’।
আদালতের বারান্দায় আনার পর দোতলা থেকে নিচে নামার জন্য তাপস লিফট ব্যবহার করতে চান। তখন পুলিশ সদস্যরা বলেন, ‘এখান থেকে লিফট যায় না।"
তারপর হেঁটে আদালত থেকে হাজতখানায় যান তাপস।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানের সময় গেল বছর ১৯ জুলাই গুলশানের শাহজাদপুরের কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন।
চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন। তাপস এই ১০৯ মধ্যে একজন আসামি।
অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আরো ৩ জন
তাপস ছাড়াও নিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুস সালাম, দৈনিক সরেজমিন মাত্রার সাংবাদিক লিটন সিকদার ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী আশা আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম জি.এম.ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এদিন এ আদেশ দেন।
সিকদার লিটন ও আশা আক্তারকে ভাটারা থানার হত্যা মামলায় এবং আব্দুস সালামকে ধানমন্ডি থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আব্দুস সালামের মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৪ অগাস্টে রাজধানীর ধানমন্ডির সাইন্স ল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ অগাস্টে বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আশা ও লিটনের মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে গত বছরের ২১ জুলাই রাজধানীর ভাটারায় আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয় মামলার আসামিরা। একে মো. জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তিনি মারা যান।