Published : 27 Jun 2025, 10:36 PM
যে গাছগুলো সচরাচর পাওয়া যায় না সেগুলোই সংগ্রহে রাখার পুরনো অভ্যাস আদনান ফেরদৌসীর; ঢাকার রামপুরায় নিজের বাড়িতে করেছেন বাগান।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্যমেলার মাঠে জাতীয় বৃক্ষমেলায় এসে মসলা জাতীয় পিপুল গাছ খুঁজছিলেন তিনি, বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে সেটি পেয়েও যান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ফেরদৌসী বলেন, “এটার কিছু ওষধি গুণ আছে। কিন্তু ব্যবহার খুব কম। দেশীয় প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। সবসময় মেলায় আসি, খুঁজে দেখি। যে গাছটা নেওয়া উচিত বলে মনে করি, নিয়ে যাই।”
আদনান ফেরদৌসীর মত অনেকেই এসেছেন জাতীয় বৃক্ষমেলায়। প্রথমদিকে ক্রেতা-দর্শনার্থী কম। মাসব্যাপী এ মেলায় সময় গড়ালে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সঙ্গে বিক্রিও জমে উঠবে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।
মেলায় ঘুরে ঘুরে গাছ দেখছিলেন মতিঝিলের মনোয়ার হোসেন। বাড়ির ছাদে শখের বাগান করেছেন। ছাদে গাছ লাগানোর মত ফাঁকা জায়গা না থাকলেও মেলায় নিজের সংগ্রহের বাইরে ভিন্ন গাছ খুঁজছিলেন তিনি।
মনোয়ার বলেন, “দেখতেছি, পছন্দ হলে একটা দুইটা কিনে নিয়ে যাব। কোনোভাবে যদি লাগাতে পারি।”
মেলায় আশুলিয়ার কিংশুক নার্সারিতে ওষুধি, বনজ আর শোভাবর্ধনকারী আড়াইশ প্রজাতির গাছ বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকা থেকে দেড় লাখ টাকার গাছও রয়েছে নার্সারিতে।
কিংশুক নার্সারির মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এখনও তেমন বিক্রি হচ্ছে না। লোকজন আসে না, হয়ত মেলার প্রচার হচ্ছে না। বিক্রি নাহলেও আমরা মেলায় আসব। নেশার মত হয়ে গেছে মেলায় আসাটা।”
মেলায় ফুল-ফলের ৫০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে উত্তরার ভাই ভাই নার্সারির বিক্রয়কেন্দ্রে। ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় তারা গাছগুলো বিক্রি করছেন।
শুরুর দিকে বিক্রি কম হওয়ার কথা তুলে ধরে নার্সারির মালিক ফারুক চৌধুরী বলেন, “মানুষ দেখতেছে। দেখবে, ঘুরবে। পরে হয়ত কিনবে। টাকা পয়সার দরকার, জায়গার দরকার। ঢাকা শহরে এখন তো আর জায়গা নাই।”
মেলায় পূর্বাচলের প্লান্ট অ্যান্ড প্লান্টার্স গার্ডেনে এডিনাম ও কডেক্স জাতের ২৬ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এর মধ্যে এডিনামের ৫১৬টি রঙের সংগ্রহ রয়েছে তাদের কাছে। গাছগুলোর বিক্রয়মূল্য ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
প্লান্ট অ্যান্ড প্লান্টার্স গার্ডেনের বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, “এডিনাম এখনও বাংলাদেশে তেমন প্রচলিত হয়নি। তারপরও ভালো বিক্রি হচ্ছে। আমরা বাইরে থেকে গাছগুলো ইমপোর্ট করি, সেটা জানানোর জন্যই আসা। সবার কাছে গাছগুলো ছড়িয়ে দেওয়া আরকি।”
বুধবার শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত।
তথ্যকেন্দ্র বলছে, বৃক্ষমেলায় এবার ১০০টি প্রতিষ্ঠানের ১৩৩টি বিক্রয়কেন্দ্র বসেছে। প্রথম দিনে মেলায় ১০ হাজার ৪১৬টি গাছ ১০ লাখ ৫২ হাজার ৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।