Published : 21 Apr 2025, 07:16 PM
গত ৩৩ বছরে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় কতজনের দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা কমানো হয়েছে তার তালিকা কেন প্রকাশ করা হবে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
এছাড়া যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া ফাঁসিসহ অন্যান্য দণ্ডিত আসামিদের অনুকম্পা দেখানো কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার দ্বৈত বেঞ্চ সোমবার এই রুল জারি করে।
রুলে বিশেষজ্ঞ বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত অনুকম্পার ক্ষমতা কেন প্রয়োগ করা হবে না তাও জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতির সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জনপ্রশাসন সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদেশের পর আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, “রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা প্রদর্শনের ক্ষমতা প্রয়োগে একটা গাইডলাইন থাকা দরকার। ধর্ষণ বা খুনের আসামির রাজনৈতিক বিবেচনায় সাজা মওকুফ করতে পারেন না।
“যদি কোনো ব্যক্তির মৃত্যু অতি সন্নিকটে, সে আর বাঁচবে না, তাকে মুক্ত পরিবেশে ৩৪ মাসের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। সাজা মওকুফের ক্ষেত্রে এটাই বিশ্বের নজির।”
এই আইনজীবী বলেন, “যদি কোন আসামির দেওয়া দণ্ড ভুল হয়েছে এবং সংশোধনের আর সুযোগ নাই, তাহলে রাষ্ট্রপতি অনুকম্পার ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকেন। যদি দেখা যায় বিখ্যাত বিজ্ঞানী, লেখক, কবি বেঁচে থাকলে রাষ্ট্রের ও সমাজের উন্নতি হবে তাহলে রাষ্ট্রপতি এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে কোনো ধর্ষক, খুনি, সন্ত্রাসী বা তাদের আত্মীয়স্বজন এভাবে রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মাফ পাবেন না।”
গত ৩৩ বছরে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় দণ্ডিত কত বন্দি মুক্তি পেয়েছেন তার তালিকা চেয়ে সরকারকে গত বছরের ২৫ অগাস্ট লিগ্যাল নোটিস দেন ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।
নোটিসের জবাব না পেয়ে চলতি বছরে হাই কোর্টে রিট করেন তিনি।
রিটে বলা হয়, ১৯৯১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে অসংখ্য দণ্ডিত আসামির কারাদণ্ড স্থগিত বা মওকুফ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায়, কাদের সুপারিশ বা তদবিরে দাগি, ঘৃণিত, কুখ্যাত সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষমা করেছেন, তা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।