Published : 26 May 2025, 12:50 PM
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন কর্মচারীরা।
রোববার রাতে ওই অধ্যাদেশ জারির পর সোমবার বেলা ১১টায় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কর্মচারীরা সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হতে থাকেন।
এ সময় তারা ওই অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ আইন পাস করার জন্য সচিবালয়ে দায়িত্বরত ছয় চুক্তিভিত্তিক সচিবের নিয়োগ বাতিলেরও দাবি জানান তারা।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি নুরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম অবিলম্বে জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবি করেন।
আন্দোলনের আরেক অংশের নেতৃত্বে আছেন বাদিউল কবীর ও নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
বাদামতলায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ দেখানোর পর খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের বিভিন্ন ভবনের বারান্দায় ঘুরতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাবে সায় দেয়।
এর প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা সেখানে মিছিলও করেন।
তাদের আপত্তির মধ্যেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রোববার রাতে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহজেই শাস্তি দেওয়া, এমনকি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।
অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে-
>> কেউ যদি এমন কাজ করে যা অনানুগত্যের সামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে;
>> এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে। কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উসকানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে;
>> কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।
এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
এসব অসদাচরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, সাত দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ জানিয়ে জবাব না দিলে আবার সাত দিনের নোটিস দেওয়ার পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। দণ্ডের নোটিস হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করা যাবে।
পুরনো খবর
সচিবালয়ে বিক্ষোভ: আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, বললেন স্বরাষ্ট
সচিবালয়ের কর্মচারীরা বললেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হলে আন্দোলন চলবেই
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ