Published : 21 May 2025, 12:31 AM
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নরওয়ের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী স্টাইন রেনাতা হাহাইম।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ আস্থা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকালে হাহাইম নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইয়োনাস গার স্তোরার পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) নরওয়েতে খুব পরিচিত একটি নাম। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই আপনাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। আপনি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু।”
দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি সংকটে নরওয়ে আমাদের পাশে থেকেছে। আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় নরওয়ের ভূমিকা অবিস্মরণীয়।”
গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতায় নরওয়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন দেশটির এই প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে সমর্থন জানাতেই আমরা এখানে এসেছি। এখন আপনার কাঁধে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, এবং দেশের মানুষ আপনার কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে।”
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সময় অনেক প্রাণহানি হয়েছে, অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগের সরকার প্রতিবছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচারে সহায়তা করেছে। ঋণকে উপহার হিসেবে দেখা হতো, যার ফলে আমরা বিশাল একটি অনাদায়ী ঋণের বোঝা পেয়েছি।”
তবুও বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সম্পর্কে আস্থা বাড়ছে মন্তব্য করে ইউনূস বলেন, “সম্প্রতি বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলো সরেজমিনে আমাদের পরিস্থিতি দেখতে এসেছিল। এর মধ্যে নরওয়ের একটি কোম্পানিও ছিল। তারা শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য আসেনি, আগ্রহ ও বিশ্বাস নিয়ে এসেছে।”
প্রধান উপদেষ্টা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নরওয়ের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গারা স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষ। যারা শিশুকালে এসেছিল, এখন তারা কিশোর। প্রতিদিন নতুন শিশুর জন্ম হচ্ছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। তারা ফিরে যেতে চায়, কিন্তু আটকে আছে। আমরা তাদের ভুলে যেতে পারি না।”
এই সংকটের গুরুত্ব ও জটিলতা স্বীকার করে নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব আমরা গভীরভাবে সম্মান করি। আমরা শুধু উন্নয়ন সহযোগী নই, বরং একটি বিস্তৃত ও গতিশীল অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চাই।”
সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন।