Published : 22 Jun 2025, 01:30 PM
চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে সংহতি জানাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করার কারণে সেদেশের কারাগারে আটক বন্দিদের দ্রুত মুক্ত করে আনাসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন প্রবাসফেরত বাংলাদেশিদের একটি দল।
এসব দাবি নিয়ে রোববার সকালে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রা করলেও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
'জুলাই ২৪ এর আন্দোলনে ক্ষতিগ্রপ্ত জেলফেরত ভুক্তভোগী প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা' ব্যানারে এই কর্মসূচির কারণে সাকুরা মোড় থেকে মিন্টো রোডগামী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাতে আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হয়।
আন্দোলনকারীদের অন্য দাবিগুলো হল– জুলাই ২৪ আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসফেরত সকল প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের 'জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা' স্বীকৃতি দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাস ফেরত সকল প্রবাসীর যৌক্তিক ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন এবং প্রবাস ফেরত সকল রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
এসব দাবি নিয়ে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা যমুনার দিকে রওনা হন। তবে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সেখানে তারা দাবি আদায়ের নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
হবিগঞ্জ থেকে আসা আহমেদ হোসেন নামের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা জুলাই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিলাম। এ কারণে বিদেশেই জেলে যেতে হয়েছে, নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে। অনেককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, কেউ এখনো জেলে বন্দি। এ অবস্থায় তাদের মুক্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নির্বাচন করতে হবে। তা না হলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না।"
বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। উপদেষ্টাদের কেউ না এলে আবার সামনে এগোনের হুমকিও তারা দিয়েছেন।
গত জুলাই মাসে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ যখন বিক্ষোভে উত্তাল, সে সময় তাতে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছিলেন বাংলাদেশিরা।
২০ জুলাই সন্ধ্যায় দুবাই, শারজাহ ও আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভের সময় ৫৭ বাংলাদেশিকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ। দুদিন পর দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সম্পদহানীর মত অভিযোগে তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয় স্থানীয় আদালত।
এরপর বাংলাদেশিদের জন্য ভিসাসুবিধা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ বরার ঘোষণা দেয় আমিরাত সরকার।
মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমিরাত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আমিরাত সরকার দেশটির আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩২ জন বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দেয়। পরে তাদের একটি অংশকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
তাদেরই একটি অংশ এখন চার দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।