Published : 28 Apr 2025, 01:53 PM
আইনিভাবে বিচ্ছেদের আগেই নতুন করে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলায় আত্মপক্ষ শুনানির দিনে আসামি ও বাদীপক্ষের আইনজীবীরা পাল্টাপাল্টি আবেদন করেছেন আদালতে। এতে শুনানিতে ‘বিব্রত বোধ’ করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি মামলাটি বদলিরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান সোমবার এ আদেশ দেন।
এদিন নাসির হোসেন এবং তামিমা সুলতানার আত্মপক্ষ শুনানির দিন ঠিক ছিল। নাসির এবং তামিমা আদালতে হাজির হন সকালে।
তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু আদালতে দুইটি আবেদন করেন। এর মধ্যে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে একটি আবেদন করা হয়।
ওই আবেদনে বলা হয়েছে, “এ মামলার বিচার চলছে। এ অবস্থায় বাদীপক্ষের আইনজীবী গত ১৬ এপ্রিল মিডিয়াতে বলেন নাসির হোসেন ব্যাভিচার করে তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আদালতে বিচার চলছে। বিচার শেষে আদালত রায়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন নাসির তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন কি না এবং ব্যাভিচারের সম্পর্ক করেছেন কি না।"
একই সঙ্গে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার পুরো অভিযোগ না শুনিয়ে সারসংক্ষেপ পড়ে শোনানোর আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান আদালতে অভিযোগ করে বলেন, “আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। আইন অনুযায়ী তিনি এখন আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন না।"
দুই পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “উভয় পক্ষেরই আবেদন দেয়ার অধিকার আছে। এটা একটা বিজি কোর্ট। একটা মামলার শুনানি করতে যে ধৈর্য দরকার, এত সময় এই আদালতের নেই। এতে অন্য মামলায় ইফেক্ট পড়ে। আমি বিব্রতবোধ করে মামলাটা অন্য কোর্টে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এতে আপনারা কি নাখোশ হবেন?"
তখন আইনজীবীরা জানিয়েছেন মামলা বদলি হলে তাদের ‘কোনো আপত্তি নেই’।
তখন আদালত মামলাটি বদলি করে সিএমএম বরাবর পাঠিয়ে দেয়।
ক্রিকেটার নাসির-তামিমার মামলায় সাক্ষ্য শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ২৮ এপ্রিল
বিচারক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “সিএমএম মামলাটি এ একটা কোর্টে পাঠিয়ে দিবেন।"
এরআগে গত ১৬ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এই মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত।
মামলায় বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। কিন্তু রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান অবস্থাতেই ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসির বিয়ে করেন।
২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তিনি এই মামলাটি দায়ের করেন।
সে বছর ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মিজানুর রহমান।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। তবে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওই বছরের ৬ মার্চ মহানগর দায়রা আদালতে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন করেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু।
অন্যদিকে সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দায়ের করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দুটো আবেদনই আদালতে নাকচ হয়ে যায়। ফলে নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে মামলা চলতে আইনি বাধা কাটে।
সে বছর ২০ মার্চ বাদী রাকিবের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু হয়।