Published : 07 Apr 2025, 07:33 PM
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশে বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
সোমবার দূতাবাসের ওয়েবসাইট, ফেইসবুক পেইজ ও এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া পোস্টে ওই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দূতাবাসের ফেইসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, “সোমবার সারা দিন বিক্ষোভ হতে পারে। গাজায় সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। সম্ভাব্য যানজট ও দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদ সমাবেশের অভিপ্রায়ের কারণে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস সোমবার বিকালের সেবা সীমিত করবে।
“যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিষয়টি নজর রাখা উচিত এবং মনে রাখা দরকার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আক্রমণাত্মক ও সহিংসতায় গড়াতে পারে। আপনাদের বিক্ষোভ এড়িয়ে চলা উচিত এবং যে কোনো বড় সমাবেশ এলাকায় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ব্যক্তিগত সুরক্ষার পরিকল্পনা যাচাই করে নিন। স্থানীয় ঘটনাবলীসহ নিজের আশপাশ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। ঘটনার ব্যাপারে আপডেট তথ্য পেতে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে চোখ রাখুন।”
রাজধানীতে সোমবার ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাথীরা স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। বিশ্বব্যাপী ডাকা কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এদিন চলে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি ।
সকাল ১০টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শাহবাগ, বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইট, কুরিল বিশ্বরোড নতুনবাজারসহ ঢাকার আরও কিছু জায়গায় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিকালেও বিক্ষোভ ও মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বাড্ডায় পথে নামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি তুলে স্লোগান দেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করে একদল শিক্ষার্থী। নতুন বাজারের কাছে মার্কিন দূতাবাসের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। সেখানে ঘণ্টাখানেক অবস্থানের পরে নতুন বাজারের মূল সড়কের একপাশ খুলে দেওয়া হয়।
দূতাবাসের সামনে অবস্থান নিতে দেখা গেছে সেনা বাহিনীর সদস্যদেরও। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে পথচারীদের তল্লাশি করছে। ফুটপাতে বা রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
গাজায় গণহত্যা বন্ধ না করা পর্যন্ত ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ নামে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে ‘ধর্মঘটের’ কর্মসূচি দেন ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সংগঠন ও মাঠপর্যায়ের কর্মীরা। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ঘোষণা আসে রোববার।
সে অনুযায়ী সোমবার বাংলাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ও পরীক্ষা বর্জন, অফিস আদালত বন্ধ রাখার জন্য আহ্বান জানায় ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এই কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানায়।