Published : 20 Apr 2025, 12:49 AM
রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে সুপারিশগুলো দিয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নে সরকারের ‘সদিচ্ছার’ প্রয়োজন দেখছেন নারী অধিকার কর্মীরা।
তারা বলছেন, সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাধা আসতে পারে। তবে বৈষম্য থেকে বেড়িয়ে আসার সময় এসেছে, ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন।
শনিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনে প্রতিটি সংসদীয় এলাকার জন্য একটি সাধারণ আসনের পাশাপাশি নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত আসন রেখে সংসদে মোট ৬০০ আসন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুই ক্ষেত্রে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করার সুপারিশও এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত এ কমিশনের তরফে।
কমিশন মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই এ সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব।
কমিশন মোটা দাগে সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার–এ তিন বিষয়ে সুপারিশ করেছে, যেখানে ‘সমতা ও সুরক্ষার’ ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে।
নারীর অগ্রগতির জন্য আছে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও জাতীয় সংস্থাগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর সুপারিশও।
নারী বিষয়ক সংস্কার প্রতিবেদনকে ‘যুগোপযোগী এবং সাহসী প্রতিবেদন’ উল্লেখ করে অধিকার ও উন্নয়ন কর্মী খুশী কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, বাংলাদেশের নারীদের যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন সংস্কার কমিশনের সদস্যরা এবং সুপারিশ সেভাবেই দিয়েছেন।
“চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে সরকারের সদিচ্ছা। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে বাস্তবায়ন সম্ভব। অতীতে যখন রাজনৈতিক সরকারের কাছে গিয়েছি আমরা, তারা বোঝাতে চেষ্টা করেছে, ভোটের রাজনীতিতে আমাদের চিন্তা করা লাগবে, আমরা দেখব কীভাবে করা যায়।
“মূল প্রশ্ন হল সরকার (বর্তমানে যারা আছে) এটা বাস্তবায়ন করবে কি না, জানি না। কিন্তু এই সুপারিশটা থাকলে আমরা যারা নারী আন্দোলনকারী আছি, যে সরকার আসুক না কেন তাদের কাছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারি।”
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নারীদের যে অগ্রসরের কথা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেটি বাস্তবায়নের জন্য ও বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি যে বৈষম্য আছে তা এড়াতে কোটা বহাল রাখার বিষয়টি যোগ করা দরকার ছিল।
কোটা ব্যবস্থা ছাড়া নারী যে পিছিয়ে আছে, সেখান থেকে তাকে উঠিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তিনি।
ফওজিয়া মোসলেম বলেন, “বর্তমানে সমাজে নারী বিদ্বেষী যে আবহ তৈরি করা হচ্ছে সে বিষয়টা কমিশনের প্রতিবেদনে তুলে আনা হয়নি, রাজনীতিতে নারীকে রাখতে সেখানে দলগুলো কী ভূমিকা রাখবে তা বলা দরকার ছিল, নারী নীতি রাখা দরকার।
“নারী কী চায় সেটার একটা অধ্যায় থাকতে পারত। কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, বাস্তবায়নে কী করতে হবে সে বিষয়টা নেই।”
তিনি বলেন, “সুপারিশগুলোকে নারীর অধিকারের অ্যাপ্রোচ থেকে যদি সরকার দেখে এবং এর জন্য দায়বদ্ধতাকে যদি ওউন করা হয় তাহলে বাস্তবায়ন সম্ভব। অধিকারের জায়গা থেকে না দেখতে অনেক কিছুই হয়ত করা হবে, কিন্তু সেগুলো প্রতীকী হবে।
“সমাজে যে পশ্চাৎপদ সংস্কৃতি বিরাজ করছে, সেই সংস্কৃতিটা এবং আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতাটা আছে সেগুলো চ্যালেঞ্জ।”
নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ রয়েছে; তবে তারা আশা হারাতে নারাজ।
“আমরা মনে করি অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই অনেক কিছু বাস্তবায়ন সম্ভব। সরকার সদিচ্ছা রাখলে বাস্তবায়ন সম্ভব। কিছু কিছু বিষয় বাস্তবায়ন করতে আইন সংস্কার করতে হবে।
“সংস্কার করতে হলে হয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে হবে, নাহলে আইন সভা লাগবে। যেহেতু এখন আইনসভা নেই, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সেটা করা যেতে পারে।”
পারিবারিক সম্পত্তিতে সমান অধিকার, অভিভাবক হিসেবে নারীর সমান অধিকারসহ বিভিন্ন সুপারিশে বাধা আসতে পারে বলে মনে করছেন সংস্কার কমিশনের প্রধান।
তিনি বলেন, “কিছু লোক তো বিরোধিতা করবেই, সেটা আমরা জানি। চ্যালেঞ্জ ছাড়া আমাদের এগুলো আগাবে না। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে, আর কতদিন? আর কতদিন চলবে এসব বিষয়?”
অন্যান্য সুপারিশ
>> সংবিধানে পরিবর্তন এনে নারী অধিকার ও নারী-পুরুষ সমতার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়া।
>> নারীদের অধিকার রক্ষায় স্বতন্ত্র স্থায়ী নারী বিষয়ক কমিশন তৈরি করা।
>> অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
>> বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে বিবাহিত বাংলাদেশি নারীদের বিদেশি স্বামীর নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করা।
>> সাক্ষী ও ভুক্তভোগী নারীদের পরিচয় গোপন রাখা এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
>> যৌনপেশাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত না করা।
>> শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
>> সিডও সংরক্ষণ প্রত্যাহার করা।
>> মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় করা।
>> পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথাগত স্থানীয় শাসনব্যবস্থা বলবৎ রাখা। এসব প্রতিষ্ঠানে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী-প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
>> সকল স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে নারীকে প্রথম ভাইস-চেয়ারপার্সন ও নারীদের এক-তৃতীয়াংশ স্থায়ী কমিটির সভাপতি করার বিধান রাখা।
>> বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
>> সেবা দানকারী সরকারি ও বেসরকারি কর্তৃপক্ষের (পরিবহণ-মালিক সমিতি, দোকানমালিক সমিতিসহ) তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীর প্রতি সম্মানজনক, মর্যাদাপূর্ণ ও সংবেদনশীল আচরণ নিশ্চিত করতে যথাযথ আচরণ-বিধিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা।
>> রাষ্ট্রীয় দলিলপত্রে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শব্দচয়নে, নারীর প্রতি মর্যাদাহানিকর ভাষা ব্যবহার বন্ধ করা। যেমন: ধর্ষিতা না বলে ধর্ষণের শিকার এবং নির্যাতিতা না বলে নির্যাতনের শিকার বলা।
>> নারীর প্রতি সম্মানজনক, মর্যাদাপূর্ণ ও যথাযথ সংবেদনশীল আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সামাজিক সচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচি নেওয়া।
>> সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো।
>> রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩% পদে নারীদের রাখা।
>> নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করাতে স্থানীয় হতে জাতীয় পর্যায়ে কর্মরত নারী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য অনুকূল কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত কাজের স্থান, টয়লেট, আবাসন, শিশু-দিবাযত্ন, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, পরিবহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া।
>> সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি রাজনীতিমুক্ত করা এবং সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ৫০% নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
>> মেয়েশিশুর বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
>> শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নারীবান্ধব করতে শিক্ষার্থীদের মাসিক স্বাস্থ্য-সম্পর্কে সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা তৈরি এবং মা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত পানিসহ পরিস্কার বাথরুম ও স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা রাখা।
>> প্রাথমিকের পর ঝরে পড়া নারীদের কারিগরি শিক্ষায় উৎসাহিত করা এবং নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবনমুখী দক্ষতা বাড়ানো।
>> বাল্যবিয়ের কারণে ঝরে পড়া কিশোরী-শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অব্যাহত রাখতে স্কুল কর্তৃপক্ষ, পরিবার ও সমাজ কর্তৃক সমন্বিতভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা।
>> নারী রোগীর জন্য সব হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো।
>> প্রান্তিক ও প্রত্যন্ত এলাকার জনগোষ্ঠী, বিশেষত আদিবাসী নারী ও মেয়েদের, কাছে পর্যাপ্ত সেবা পৌঁছাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া।
>> কর্মস্থলের নিয়ম ও শ্রম আইন সংশোধন করে নারী কর্মীরা যাতে প্রয়োজনে সন্তান লালন-পালন করতে কর্মক্ষেত্রে বিরতি নিতে পারে এবং এর ফলে তাদের পদোন্নতি বিপর্যস্ত না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া।
>> শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।
>> কর্মস্থলে নারী-পুরুষ বৈষম্য ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা এবং সুপারিশ ২০৬ অনুসরণ করা।
>> প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিকদের জন্য সরকারি হাসপাতালে মাতৃত্বকালীন সুবিধা নিশ্চিত করা।
>> সব ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ (মহামারী, বন্যা) ও শিল্পায়নে (আধুনিক প্রযুক্তি) নারীদের সুরক্ষার জন্য অগ্রাধিকার নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা।
>> কর্মক্ষেত্রে প্রসূতিকালীন ছুটি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অংশীজনের সমন্বয়ে পরিবীক্ষণ সেল গঠন। প্রসূতিকালীন ছুটির সময় সরকারি ও বেসরকারি খাতে সরকারি ভর্তুকি ও বীমার ব্যবস্থা করা।
>> আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার হিসাবে মূল্যস্ফীতির প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করা।
>> গণমাধ্যমকর্মী আইন ২০২২ এর খসড়া পর্যালোচনা করে বৈষম্যমূলক বিষয়বস্তু সংস্কার করা এবং নতুন আইন বাস্তবায়ন করা, যা সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ওই আইনে কর্মীর নিয়োগপত্র, কর্মী ও নিয়োগদাতার মধ্যে সম্পর্ক ও পারস্পরিক দায়িত্ব, কর্মঘণ্টা, নূন্যতম মজুরি ও চাকরির সুযোগ-সুবিধা (প্রভিডেন্ট ফান্ড, অসুস্থতাজনিত ছুটি, প্রসূতিকালীন ও পিতৃত্বকালীন ছুটি, বিশ্রাম, চিকিৎসাভাতা, এসোসিয়েশন ইত্যাদি) সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক বিষয় ছাড়াও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে করণীয় ও সুরক্ষাব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা।
>> গণমাধ্যমের জন্য যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন করা।
>> মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করে নারীদের সম্পত্তিতে ৫০-৫০ ভাগ নিশ্চিত করা।
>> নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া।
>> জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট তৈরি করা।
>> বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে ফৌজদারি আইনে অন্তর্ভুক্ত করে আইন সংশোধন করা।
>> গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোচনায় নারীবিদ্বেষী প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করতে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করা।
>> সরকারি, বেসরকারি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুই সপ্তাহ পিতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আইন প্রণয়ন করা। বিশেষ ক্ষেত্রে (যেমন- মৃত সন্তান প্রসব, সন্তানের মৃত্যু বা দ্বিতীয় বিবাহে সন্তান) নারীদের জন্য প্রসূতিকালীন ছুটি চার বার পর্যন্ত শিথিল করা এবং দত্তক সন্তানের জন্যও ছুটির বিধান রাখা।
>> কর্মক্ষেত্রের স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত নারীদের জন্য কাজের অনুকূল পরিবেশ যেমন: শিশু-দিবাযত্ন, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, আলাদা টয়লেট, আবাসিক ব্যবস্থা ও নিরাপদ পরিবহণ-সুবিধার বাস্তবায়ন তদারকি করা।
>> ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসার বোর্ড, সরকারি সংস্থা ও আধা-স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাগুলোর নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে নিজস্ব যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত কমপক্ষে ৪০% নারী অন্তর্ভুক্ত করা।
>> চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো।
>> মাসিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনে সবেতন ছুটির ব্যবস্থা।
>> গণমাধ্যমের প্রত্যেক শাখায় অন্তত ৩৩% নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া।
>> গণমাধ্যম বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো নারীবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ নভেম্বর ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হককে প্রধান করে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে।
এ ধাপে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়।
এসব সংস্কার কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে প্রথমে ৩১ মার্চ এবং দ্বিতীয় দফায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।
কমিশনগুলোর মধ্যে ‘স্থানীয় সরকার সংস্কার’ কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশের প্রতিবেদন জমা পড়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি।
এরপর ২২ মার্চ জমা দেওয়া হয় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন।
শনিবার নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর বাকি রইল স্বাস্থ্য ও শ্রম কমিশনের প্রতিবেদন।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের হাল ধরা অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সে বছর অক্টোবরে প্রথম ধাপে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। কমিশনগুলো হল- সংবিধান সংস্কার, বিচার বিভাগ সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, জনপ্রশাসন সংস্কার, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার।
এর মধ্যে পুলিশ সংস্কার ছাড়া অন্য পাঁচ সংস্কার কমিশনের গুরুত্ব সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে ২০ মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।