Published : 01 Jun 2025, 05:59 PM
স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ‘যৌতুক দাবির’ মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় এক নারীকে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. জুনাইদ রোববার এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যৌতুক দাবির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ২৪ মে আসামি ফরিদ আহমদকে খালাস দেয়। সে দিন মামলার বাদী ইসরাত জেরিন খান প্রথমাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। এদিন তিনি জবাব দাখিল করেন। তবে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আদালত তাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
বেঞ্চ সহকারী বলেন, বাদী আপিল দায়েরের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে তাকে জামিন দিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রথমা স্বামী ফরিদ আহমদ এবং শ্বশুর আমিনুল হককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদ এবং প্রথমা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের সময় প্রথমার পরিবার ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবের নগদ ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। চাকরির সুবাদে ফরিদ আহমদ ফ্রান্সে চলে যান। প্রথমাকে বাবার বাড়িতে রেখে যান।
প্রথমা অভিযোগ করেন, কাজী নিপা নামে এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান ফরিদ। সে বছর ২ অগাস্ট বিষয়টি প্রথমা তার শ্বশুর আমিনুল হককে জানান। তখন তার শ্বশুর বিশেষ প্রয়োজনে ৫০ লাখ টাকা চান। জানতে চাইলে বলেন, যৌতুক হিসেবে এই টাকা চান তিনি। প্রথমা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমিনুল হক তাকে মারধরেন করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, শ্বশুরের যৌতুক চাওয়ার বিষয়টি প্রথমা তার স্বামীকে জানান। ফরিদও তার বাবার পক্ষ নেন। টাকা না দিলে নিপাকে বিয়ের হুমকি দেন। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি ফরিদ বাংলাদেশে আসেন। ২৫ জানুয়ারি কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়ায় প্রথমার খালার বাসায় তারা দেখা করেন। তখন ফরিদ ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন, না হলে অন্যত্র বিয়ে করার হুমকি দেন। প্রথমা যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফরিদ তাকে মারধর করে সেখান থেকে চলে যান।
বিচার চলাকালে আত্মপক্ষ শুনানিতে ফরিদ আদালতকে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই প্রথমা তাকে তালাক দেন। ঘটনার তারিখ দেখানো হয়েছে ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি। ওইদিন তিনি ফেনী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমিজমা সংক্রান্ত কাজে ছিলেন। তালাকের চার বছর পর লোভের বশে তার বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী এই মামলা করেছেন।
ফরিদের আইনজীবী হাসনাতুল কাউছার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা খালাস পেয়েছি। মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় বাদী সাজা পেয়েছেন। এটা একটা দৃষ্টান্ত হবে। এভাবে আর কেউ যেন কাউকে হয়রানি করতে না পারে।”