Published : 01 May 2023, 01:21 AM
রাজধানী ঢাকার অদূরেই আমিনবাজারের এক ইটভাটায় সবার মতোই কাজ করেন আনোয়ারা, সাবিনা ও সুফিয়ারা। সকাল সাড়ে সাতটায় আসেন, ফেরেন বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। হিসাবে তা ১০ ঘণ্টা হলেও সকাল দশটায় আধা ঘণ্টা, বেলা ১২টায় আধা ঘণ্টা আর দুপুর দুইটায় খাওয়ার জন্য এক ঘণ্টা ‘জিরানি’ থাকায় কাজের সময় ভাটার হিসাবে কেটেকেটু হয় আট ঘণ্টা।
ঐতিহাসিক মে দিবসের সুফল বলতে নির্দিষ্ট একটি কর্মঘণ্টার এটুকুই নিজেদের অজান্তে পান এসব নারী শ্রমিক। তবে সবসময়ই যে তা মানা হয় তা না।
কখনও কখনও কাজ শেষ করার সময় সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতে গিয়ে ঠেকে। মে দিবসের দুদিন আগে শনিবার যখন আনোয়ারা ও সুফিয়াদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন পড়ন্ত বিকেল। চারদিক কালো করে আসছে বৃষ্টি। ঘণ্টা ধরে কাজের হিসাব যাই হোক, ভাটার নিয়ম মেনে কাঁচা-পাকা সব ইট-মাটি-কয়লা পলিথিনে ঢেকে রেখে তবেই বাড়ি ফিরতে পারবেন শ্রমিকরা। ভাটায় চলছিল সেই প্রস্তুতিই।
এমনই এক দিনের কথা স্মরণ করে মাঝবয়সী আনোয়ারা বেগম বললেন, “হেইদিন আতকা (হঠাৎ) মেঘ আইছে বেকতা ঘুইরা (ঢেকে) যাইতে যাইতে রাইত অইছে। বেতন যা তাই। কী করন যাইবো, কাম না করলে কি আর ভাত আছে?”
পাশ থেকে শ্রমিক সাবিনা বলেন, “এই বাজারে এই মজুরিতে কিছু হয় না, হওয়ান লাগে। বাজারে গেলে চাইলের কেজি ৭০ ট্যাকা। মাছ-মাংস এগুলা তো খাইই না। ডিমের হালিও ৫০ ট্যাকা। কেমনে চলি আপনেই কন।”
কয়লাভর্তি টুকরি মাথায় সুফিয়া বেগম বলেন, “ঘরে অভাব থাকলে যা পাওয়া যায় তাই করন লাগবো। আমি না করলে আরেকজন করবো।”
বিশ্ব শ্রমিক দিবসের প্রাক্কালে কতটুকু সময় কাজ করছেন সেটির চেয়ে দিন মজুরিরভিত্তিতে খেটে খাওয়া এসব শ্রমিকদের কাছে আয়ের সুযোগ পাওয়াটাকেও বড় করে দেখছেন তাদের অনেকেই। দিবসের চেয়ে তাদের কাছে তাই মজুরিটাই বড়।
ইটভাটার কাজে যুক্ত এসব শ্রমিক বহুকাল ধরেই দিবসভিত্তিক আয়োজনের আড়ালে আছেন, তা স্পষ্ট ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের (ইনসাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের কথাতেও।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের তো সব নির্মাণ শ্রমিক। কিন্তু তারাও (ইটভাটার শ্রমিক) আমাদের শিল্পের অংশই। কিন্তু তাদেরকে আমি কখনও আয়োজনে দেখিনি বা তাদের কোনো সংগঠনের কথাও আমার জানা নেই।”
সরকার যে ৪৪টি খাতকে ঘোষণা দিয়ে নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করেছে সেখানেও নেই ইটভাটা। নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ বলেন, “ইটভাটায় নিম্নতম মজুরি কত হবে তা নির্ধারিত নয়। কারণ সরকারের নিম্নতম মজুরির যে ঘোষিত ৪৪টি খাত আছে সেখানে ইটভাটা নেই।”
শ্রমিক ও ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, মজুরি নির্ধারিত হয় ভাটা মালিকদের মর্জিমতোই। কখনও কখনও দক্ষতার বিষয়টি আমলে নেওয়ার দাবি করা হলেও বেশির ভাগ শ্রমিকেরই মজুরি নিয়ে দামদর করার সুযোগ থাকে না। এমনকি ইটভাটায় শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের এক দাদনের খোঁজও মিলল।
এক ইটভাটার ব্যবস্থাপক বলেন, ইটভাটায় অনেক আনকোড়া শ্রমিকদের চুক্তিতে নিয়ে আসেন সরদারেরা। হয়ত কারও ২৫-৩০ হাজার টাকা দরকার। তাদের সেই টাকা দিয়ে দৈনিক মজুরি হিসেবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়ে আসেন।
বাংলাদেশ ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আবু বকর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একেবারে সঠিক হিসাব না থাকলেও, আমরা যে হিসাব পাই সে অনুযায়ী সারাদেশে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ইটভাটা আছে। এখানে গত দুই বছরে কয়লার দাম বাড়াসহ বিভিন্ন কারণে ইটের দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।”
ইটের দাম বাড়লেও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “এটা তো চুক্তিভিত্তিক আর মজুরি আসলে দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। যারা দক্ষ তারা কেউ কেউ কত ইট নির্মাণ করছে বা বহন করছে তার ওপর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দৈনিক মজুরি পায়। আবার কেউ কেউ আছে অদক্ষ, ১২-১৩ বছরে বাচ্চা। তারা নিম্নে ৫০০ টাকা পায়। জিনিসের দাম যে বেড়েছে তার সাথে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। দুই বছর আগে যে ৪০০ টাকা পেত, সে এখন ৬০০ পায়, যে ৬০০ টাকা পেত সে ৮০০ টাকা পায়।”
দুই দফায় মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করা আবু বকরের দেওয়া মজুরির এ তথ্যের সঙ্গে অবশ্য মাঠের তথ্য কমই মিলেছে। সাভারের আমিনবাজারের কয়েকটি ভাটার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের মজুরি দুই-তিন বছরে ৫০ থেকে ১০০ টাকার বেশি বাড়েনি।
দিবস দিয়া কিতা অইবো?
আমিনবাজারের ওই ইটভাটার জ্বালানি কয়লার স্তুপ থেকে টুকরিতে করে কয়লা বহন করে কয়লা ভাঙার মেশিন পর্যন্ত নিয়ে যান টাঙ্গাইলের মধুপুরের সুফিয়া বেগম। আর স্তুপ থেকে কোদালে কয়লা কেটে টুকরিতে ভরে তার মাথায় তুলে দেওয়ার কাজ করেন নেত্রকোণা সদরের আনোয়ারা বেগম।
মহান মে দিবসের কথা তুললে সুফিয়া নিজের আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, “এই দিবস কী জিনিস জানিও না, কোনোদিন এইসবে গেছি না, যাইও না, দিনমজুরি কাম করি, কষ্ট কইরা ভাত খাই, এট্টুক বুঝি।”
আনোয়ারার ভাষ্য, “শ্রমিক দিবস না কি দিবস এইতা কুনুস্তাই (কিছুই) আমরা বুঝি না। সমিতি-টমিতি কোনোদিন করছি না। কাম করি, বেতন পাই, দিন চালাই। দিবস দিয়া কিতা (কী) অইবো?
“এই যে ঈদ গেছে শ্রমিকরার কোনো নেতা কী দেখতো আইছে একবারো, না আমরারে কিচ্ছু দিছে। এইতা হুদাই (শুধু শুধু)।”
১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে হে মার্কেটের শ্রমিকরা শ্রমের ন্যায্য মূল্য এবং আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলন দমনে সেদিন শ্রমিকদের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল। ১০ শ্রমিকের আত্মত্যাগে গড়ে ওঠে বিক্ষোভ।
প্রবল জনমতের মুখে যুক্তরাষ্ট্র সরকার শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়।
এরপর ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফ্রান্সের প্যারিসে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর শ্রমিকদের সংগ্রামী ঐক্যের অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস ঘোষণা করা হয়।
১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বে শ্রমিক সংহতির আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ১ মে 'মে দিবস' পালিত হচ্ছে।
এখন আমাদের দেশেও 'মে দিবস' উদযাপিত হচ্ছে। তবে দিবসটি কি তা জানেনই না অনেকে; আনোয়ারা-সুফিয়াদের মতো ইটভাটার শ্রমিকদের কাছে এর মর্ম ছুঁয়ে যাওয়াতো আরও দূরের বিষয়।
কয়লা ভাঙার মেশিনের পাশে কাজ করা এ দুই নারীর দিনে কত টুকরি কয়লা মেশিনে তোলেন জানতে চাইলে সেটি প্রতিদিন ঠিকঠাক হিসাব করা হয় না বললেন। তবে তাদের ধারণা ৫০০ এর কম নয়। সেই হিসাবে প্রতি টুকরি বহনে এক টাকাও পান না তারা।
আমিনবাজারের আরেক ইটভাটার শ্রমিক রুহুল আমিনের কাছে শ্রমিক দিবসের আলাপ তুলতেই তিনি করলেন পাল্টা প্রশ্ন- “শ্রমিক দিবস কী? এই দিবসে কী হয়? টাকা-পয়সা দেয় কিছু? আমি কোনোদিন যাই নাই, কইতে পারি না। দিন আনি দিন খাই। এই দিয়া চলি। দুই-চাইর আনা কোনোকিছুই কোনো নেতা দেয় নাই।”
গত দুই বছরে ইটের দাম বেড়েছে ‘৪০ শতাংশ পর্যন্ত’। বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয় ও দ্রব্যমূল্য। কিন্তু ইটের ভাটায় কাজ করা শ্রমিকরা বলছেন তাদের মজুরিতে ১১ থেকে ২২ শতাংশের বেশি পরিবর্তন আসেনি। টাকার অংকে যা ৫০ থেকে ১০০ টাকা।
আমিনবাজারের কয়েকটি ভাটার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের মজুরি দুই-তিন বছরে ৫০ থেকে ১০০ টাকার বেশি বাড়েনি। অথচ ইট আর কয়লার বোঝা বহনের কাজ তাদের করতে হচ্ছে জীবিকার চাকা সচল রাখতে। এর বিকল্প কাজ না জানায় উপায়ও নেই বলে তারা জানান।
কাজে থামা নেই, মজুরিতে সুখ নেই
“আশিন (আশ্বিন) মাসেও এই খলাত (ভাটায়) বেকটা দলে (কুচুরিপানায়) ভরা আছিন। আডুসমান (হাঁটু) ফানির তলে (নিচে) আছিন। এইতা বেকতা (সব) সাফ করছি। ফরে দিয়া চুলাত ইট উঠছে। হেইবালা (ওই সময়) বেতন আছিন ডেইলি সাড়ে চাইরশ, ওহন ফাশস (পাঁচশ) অইছে।”
এমনটাই বলছিলেন আমিনবাজারের মেসার্স সিদ্দিক ব্রিকস ফিল্ডে কাজ করা আনোয়ারা। এ অর্থে সংসার চলে না তাদের। বোঝা বহন করে আর টুকরি তুলে যে শ্রম দেন তাতে দিন শেষে কোনো রকমে খেয়ে পরে চলছে তাদের।
এ ভাটায় কাজ করা আরেক নারী শ্রমিক সাবিনা বেগম বলেন, “এইতা কইলে আর লেখলেই বা কী হইবো। আমরা তো আর কিছু পাই না। ঘরে তিন পোলা, হেরা গাড়িতে থাকে, কাম করে। ঘরভাড়া আছে, জিনিসের দাম যেমনে বাড়ছে, কাম না কইরা আর কি হইবো। যা পাই তাই মাইনা করা লাগবো। কিছু করবার তো নাই।”
এ ইটভাটার ব্যবস্থাপক আবু নাহিদের হিসাবে ঢাকায় দৈনিক ইটের চাহিদা প্রায় তিন লাখ। বড় আকারের একেক ভাটায় সব মিলিয়ে অন্তত ১৫০ জন শ্রম দেয়।
তিনি বলেন, “এখানে যে শ্রমিকেরা আসে তারা বেশিরভাগ অশিক্ষিত, অদক্ষ। সরদারেরা দেখা যায় তাদের চুক্তিতে আনে। হয়তো কারও ২৫-৩০ হাজার টাকা দরকার। তাদের সেই টাকা দিয়ে দৈনিক মজুরি হিসাবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়ে আসে।”
ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এই বাজারে তাদের যে মজুরি তা অনেক কম। অনেক কিছুই করার ইচ্ছে ছিল। তাদের অধিকার নিয়েও কথা বলার ছিল। কিন্তু করোনার কারণে অনেক কিছুই অগোছালো হয়ে গেছে।”
নারী-পুরুষে মজুরি বৈষম্য
ইটভাটায় একই কাজ করে আনোয়ারা, সাবিনা ও সুফিয়ারা ৫০০ টাকা মজুরি পেলেও তার পুরুষ সহকর্মীরা পান দিনে অন্তত ৫০ টাকা বেশি। শ্রমের মজুরিতে এই বৈষম্যের কারণও ঠিক করে জানা নেই তাদের।
সাবিনার কথায়, “তারা হইলো পুরুষ, ব্যাডা মানুষ। তাই তাগোরে বেশি দেয়, এইডাই জানি। কয় তো, মহিলারা কাম কম করে। কিন্তু খলাত কী আর কামের অভাব আছে?”
সুফিয়া বললেন, “কাম কিন্তু হমানই। কামের ধারে কি আর বেডা-বেডি আছে।”
এ মজুরিতে কীভাবে চলে জানতে চাইলে আনোয়ারা বললেন, “কী আর করুম, কাম না করলে পেডে ভাত নাই। ১০টার পরেত্তে তিন বেলা কয়লা ভাঙ্গি। ব্যাডারা বেশি নিলেও আমরা কিছু কইতাম পারতাম না। মালিকেরা কইবো, পুষাইলে এই কাম করো নাইলে যাওগা।”
আনোয়ারা-সুফিয়াদের সঙ্গে এ আলাপ চলাকালেই সেখানে উপস্থিত ইটভাটার শ্রমিকদের তত্ত্বাবধায়ক গোলামুর রহমান। কাজে গতি কমায় খানিক বিরক্ত তিনি।
তার কাছে নারী পুরুষের মজুরিতে পার্থক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুরুষের মতো কী আর মহিলারা কাজ করতে পারে। পুরুষ ওজন টানে বেশি, পুরুষ ৫০ কেজি নিলে মহিলারা নেয় ২৫ কেজি। তারা কী আর একটানা কাজ করে। একটু পরপর পান খায়।”
পুরুষেরা একটু পরপর ধূমপান করলে কাজের গতি কমে কি না এই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর দেননি তিনি।
নারী আন্দোলন কর্মী ও নারীপক্ষ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন হক এ প্রসঙ্গে বলেন, “সমাজের ভাবনাটাই হচ্ছে, নারী কোনো অবস্থাতেই পুরুষের সমান না, তাই পুরুষের সমান মজুরি পাওয়ার যোগ্য না। এটাই তাদের যুক্তি। কোনোক্ষেত্রেই নারীকে সমান বিবেচনা করা হয় না। কিছু ক্ষেত্রে মানুষই মনে করা হয় না, করলেও সে মেয়ে মানুষ। সুতরাং তার প্রাপ্তিটাও কম হবে।”
কয়লার মেশিনের কাছে কাজ করা আনোয়ারার কাছে অসুস্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বললেন, “গরীবেরে আল্লায় রহমত করে। বড় কোনো অসুখ অইছে না। সর্দি কাশি, বাতের বেদনা (ব্যথা) অইলে ফার্মাসি আছে বেদনার ওষুধ কিইন্না খাই।”
কী করা যেতে পারে?
নারী শ্রমিকের মজুরি বৈষম্য দূর করতে করণীয় সম্পর্কে নারীপক্ষের শিরীন হক বলেন, “এইসব মানসিকতা চুরমার করতে হবে। চুরমার ছাড়া আমি সমাধান দেখি না। কিন্তু এই ভাবধারা চুরমার করার মতো মানসিকতার লোক তো কম। গুটিকয়েক মানুষ দিয়ে হাজার বছরের চিন্তাধারা ভাঙ্গা যাবে না, একটা ভাঙনের ঢেউ লাগবে, তার জন্য ভাঙ্গনের পক্ষের অনেক মানুষ দরকার।
“রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে, রাষ্ট্র যেমন এসব বিষয়ের সমাধানে ব্যর্থ, আমরাও তেমনি রাষ্ট্রের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগে ব্যর্থ।”
ইটভাটার শ্রমিকদের মজুরির ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের বেতনের বৈষম্য কোথাও লেখা নেই। একজন নারী শ্রমিক যে মজুরি পাবে, একজন পুরুষ শ্রমিক সেই পরিমাণ মজুরি পাবে। এটা মজুরি বোর্ড থেকে পাস করা।”
এসব ব্যাপার নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযোগ আসা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কেউ যদি অভিযোগ না করে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। অভিযোগ করলে সাথে সাথে আমরা সেই জিনিস ধরি। যখন জানি তখন আমি নিজেই ডাকাই। কোথায় কোন ইটভাটায় কী হচ্ছে তা তো আমাকে জানাতে হবে, অধিদপ্তরকে জানাতে হবে। অভিযোগ না করলে তো এসব আমলে আনা সহজ না।”