Published : 18 Jun 2023, 06:55 PM
একটি দেশের দ্রুত অগ্রগতি কেউ ‘সহ্য করতে’ পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই বাংলাদেশে বারবার সফল হয়েছে।
বাংলাদেশ বারবার ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ শিকার হয়েছে মন্তব্য তিনি বলেন, “আমরা কারও হস্তক্ষেপের কাছে মাথা নত করব না। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত।”
রোববার বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) ৩৭তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উপলক্ষে তার দপ্তরে বিশেষ দরবার (সমাবেশ) অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলে বাসস জানায়।
শেখ হাসিনা বলেন, “এখনও অনেক বাধা এবং ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। কারণ একটি দেশ যখন দ্রুত অগ্রগতি করে, তখন অনেকেই তা সহ্য করতে পারে না। তারা বিভিন্ন ঝামেলা শুরু করে।”
বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা একটি স্বাধীন জাতি। আমরা যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ অর্জন করেছি।”
এসময় তিনি একটি স্বাধীন ও বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে মাথা উঁচু করে দেশের সবাইকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে চলার আহ্বান জানান।
সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রণীত ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব এবং কারও সাথে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করছে। সরকার গুরুত্বপূর্ণদের (কূটনৈতিকভাবে) সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে কাজ করছে। দেশের উন্নয়নে যা যা প্রয়োজন তা করছে। অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।
“বাংলাদেশ বারবার প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখী হয়েছে; কিন্তু সফলতার সাথে সেগুলো কাটিয়ে উঠেছে।”
এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্যে বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাহিনীর কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।
এসময় দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য এসএসএফ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৮৬ সালের ১৫ জুন রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়। পরে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর ১৯৯১ সালে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামকরণ করা হয়।
এরপর থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্র বা সরকার কর্তৃক ঘোষিত ভিআইপিদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে এ বাহিনী।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের সঠিক নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনা, পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ দিনে দিনে উন্নতি করতে থাকবে।”
তিনি আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সশস্ত্র এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের পথ খুলে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের এ ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে- যাতে এই প্রযুক্তি দেশের মানুষের ক্ষতি করতে না পারে।”
এসময় প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, সমুদ্র সীমানা নিয়ে বিরোধ মীমাংসা এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের পাশাপাশি একই দিনে ১০০টি সেতু ও ১০০ সড়ক উদ্বোধনসহ সরকারের নানা সাফল্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, তারা বিশ্বব্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। কারণ এ ব্যাপারে তার সরকারের কোনো দুর্বলতা ছিল না।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ সক্ষমতা দেখিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবার কাছে সম্মান পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান সংকলিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭৫টি বাণী সম্বলিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর উক্তি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।