Published : 05 Jul 2025, 09:27 PM
তুলা আমদানিতে সরকারের আরোপ করা ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারসহ তিনটি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইলস মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
টেক্সটাইল মালিকদের সংগঠনটির ভাষ্য, এই আয়কর প্রত্যাহার না হলে দেশি টেক্সটাইল মিলগুলো প্রতিযোগী দেশগুলোর সক্ষমতার তুলনায় ‘পিছিয়ে তো পড়বেই, কোনোভাবে টিকেও থাকতে পারবে না’।
শনিবার ঢাকার গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
সংগঠনটির সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল অভিযোগ করে বলেন, “সরকার সংশ্লিষ্ট সমিতির সাথে আলাপ আলোচনা ছাড়াই তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করেছে। অথচ, অতীতে কখনোই তুলা আমদানিতে কোন ধরণের শুল্ক ছিল না।”
তিনি বলেন, “আপাতদৃষ্টিতে কর আরোপ সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে সুবিধাজনক মনে হলেও এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। এর ফলে দেশের টেক্সটাইল খাত মারাত্মক সংকটে পড়ে যাবে।”
এর কারণ ব্যাখ্যা করে শওকত বলেন, “এতে উৎপাদন খরচ স্বাভাবিকভাবেই উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে, যা আমাদের সক্ষমতাকে প্রতিযোগী দেশের তুলনায় পিছিয়ে দিবে এবং কোনো অবস্থাতেই দেশীয় টেক্সটাইল মিলগুলো ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিয়ে ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেকবার তুলা খালাসে ক্ষেত্রে এই আয়কর দিতে হলে বছর শেষে তা ২৯ শতাংশ হয়ে যাবে এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালকে (ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি) ক্রমান্বয়ে সংকুচিত করবে, যা টেক্সটাইল খাতের মত আমদানি পরিপূরক শিল্পের জন্য অসহনীয় হবে।
“এভাবে চক্রবৃদ্ধি হারে অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হলে তিন বছরের মধ্যে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল শূন্য হয়ে যাবে।”
এতে দেশীয় মিলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রতিযোগী দেশ হতে আমাদের দেশে আমদানি বৃদ্ধি পাবে। এতে সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে এবং তাদের দেশের কর্মসংস্থান হবে।
“ফলে রপ্তানিতে দেশের মূল্য সংযোজন কমে যাবে। এ অবস্থায়, দেশি শিল্প রক্ষার স্বার্থে অনতিবিলম্বে তুলা আমদানিতে আরোপিত ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করা অত্যাবশ্যক।”
তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ছাড়াও টেক্সটাইল খাতে ব্যবসা হতে অর্জিত আয়ের উপর প্রদেয় ১৫ শতাংশ আয়কর (করপোরেট ট্যাক্স) হারের মেয়াদ জুনের পর না বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিটিএমএ সভাপতি।
তিনি বলেন, “দেশি টেক্সটাইল মিলে তুলা থেকে উৎপাদিত সুতা, কৃত্রিম আঁশ ও অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার উপর উৎপাদন পর্যায়ে কেজি প্রতি সুনির্দিষ্ট কর ৫ টাকা আরোপ দেশি টেক্সটাইল শিল্পের চ্যালেঞ্জে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।”
তিনি এই কর অব্যাহতি দিতে সরকারির কাছে দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিটিএমএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, সালেউদ্দিন জামান খান বক্তব্য রাখেন।