Published : 28 Jan 2024, 09:44 PM
প্রধান অর্থ কর্মকর্তার পদ থেকে পদত্যাগ করেও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন না শহীদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে, এই মুহূর্তে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা যাবে না। পরবর্তী নিদের্শ না দেওয়া পর্যন্ত শহীদুল হক বিদেশেও যেতে পারবেন না।
প্রাইম ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান কবীর খানকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আহসান কবীর খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ২১ ডিসেম্বর আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমন চিঠি দেওয়ার পর জানুয়ারি মাসে পরিচালক পর্ষদের বৈঠকে শহীদুল হকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি।’’
গত ২০২৩ সালের জুন মাসে এক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহীদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করার বিষেয় এক মাস আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।
ব্যাংক খাতের জন্য এরকম বিধান অনেক আগে থেকেই রয়েছে। সেই নিয়ম মেনেই প্রাইম ফাইন্যান্সের প্রধান অর্থ কর্মকর্তার (সিএফও) দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শহীদুল ইসলাম। প্রাইম ফাইন্যান্স তা বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে গত ডিসেম্বরে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত দেয়।
প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হয়েও আর্থিক খাতের আরেক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন শহীদুল ইসলাম। সেই কোম্পানিও দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত।
২০১৫ সালে নিয়োগ পেয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের নীরিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন শহীদুল ইসলাম।
কর্মচারী হয়েও একই খাতের আরেক কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক তিনি কীভাবে হলেন, সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে প্রাইম ফাইন্যান্সের এমডি আহসান কবীর বলেন, “এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এই প্রতিষ্ঠানের (প্রাইম ফাইন্যান্স) কর্মকর্তা হিসেবে তার সকল দায়বদ্ধতা এখানে। তিনি অন্য কোথাও কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়ালে বা নাম এলে তার দায় প্রাইম ফাইন্যান্স নেবে না।’’
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালক নিয়োগ দিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন লাগে। শহীদুল ইসলাম স্বতন্ত্র পরিচালক থাকা অবস্থায় ফারইস্ট ফাইন্যান্সের বিভিন্ন ঋণ অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেই তদন্ত পুরোটা শেষ হয়নি জানিয়ে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জারিয়াব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটককমকে বলেন, “এক কোম্পানির কর্মচারী হয়ে একই ধারার আরেক কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক হওয়াটা অনৈতিক চর্চা। যারা তাকে (শহীদুল ইসলাম) নিয়োগ দিয়েছিলেন তারা ভালো বলতে পারবেন। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে সহযোগিতা করছি।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য জানতে মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাহুল হককে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। প্রাইম ফাইন্যান্সের কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামকে ফোন করেও সাড়া মেলেনি।