Published : 17 Jun 2025, 07:09 PM
চতুর্থ ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সব আলো কেড়ে নেন এইডেন মার্করাম। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের নায়কদের একজন কাগিসো রাবাদাও। ফাইনালে ৯ উইকেট নিয়ে তিনি নাড়িয়ে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। তাকে ‘সুপারস্টার’ হিসেবে বর্ণনা করেন কোচ শুক্রি কনরাড। তবে নিজেকে কোনো তারকা হিসেবে দেখেন না রাবাদা। কঠোর পরিশ্রম ও উন্নতি করে সামনে এগিয়ে যেতে চান তিনি। প্রয়োজনে এই দলের জন্য শরীরের রক্ত দিতেও দ্বিধা করবেন না ৩০ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার।
লর্ডসের ফাইনালে গত শনিবার অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ২৭ বছরের আইসিসি ট্রফি-খরা কাটায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৩৬ রানের চমৎকার ইনিংস খেলে ম্যাচ-সেরার পুরস্কার জেতেন মার্করাম। প্রথম ইনিংসে ৫১ রানে ৫টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৪ রানে ৪টি উইকেট নেন রাবাদা। এই ম্যাচেই অ্যালান ডোনাল্ডকে ছাড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় চার নম্বরে ওঠেন তিনি। টেস্ট ইতিহাসে অন্তত ১৫০ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে সেরা স্ট্রাইক রেট তারই।
সম্প্রতি কিছুদিন নেতিবাচক কারণে খবরের শিরোনাম ছিলেন রাবাদা। গত এপ্রিলের শুরুতে হুট করে আইপিএলের মাঝপথে দেশে ফিরে যান তিনি। তখন তার ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্স জানিয়েছিল, ‘ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ কারণে’ ফিরে গেছেন তিনি।
পরে বেরিয়ে আসে আসল কারণ। রাবাদা নিজেই জানান, ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা পেয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এসএ টোয়েন্টি চলাকালীন ডোপ পরীক্ষায় তিনি পজিটিভ হয়েছিলেন। সেই পরীক্ষার ফল আসে এপ্রিল, যখন তিনি আইপিএলে খেলছিলেন।
এক মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আইপিএল দিয়েই পরে খেলায় ফেরেন রাবাদা। এ যাত্রায় আইপিএলে দুটি ম্যাচ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে স্রেফ চার ওভার বোলিং করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেমে পড়েন তিনি।
ক্রিকেট-তীর্থ বলে পরিচিত লর্ডসে গত চক্রের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অসাধারণ বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের দীর্ঘ শিরোপা খরা কাটাতে তিনি রাখলেন উল্লেখযোগ্য অবদান। তবে পা মাটিতেই রাখতে চান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৭৫ উইকেট শিকারি পেসার।
“আমি নিজেকে একজন তারকা হিসেবে দেখি না। নিজেকে এমন একজন হিসেবে দেখি, যে এই দলের জন্য রক্ত দিতে এবং কঠোর পরিশ্রম ও উন্নতি করতে প্রস্তুত। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি সবসময় উন্নতি করতে চাই, অনেক গর্বের সঙ্গে এই ব্যাজের জন্য খেলি। আমি খুব কঠোর পরিশ্রম করছি। দ্বিতীয় ইনিংসের সেই স্পেলগুলো, যখন একটু ক্লান্ত থাকেন, তখন এগুলোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রাবাদার রেকর্ড বরাবরই ভালো। দলটির বিপক্ষে ১১ টেস্টে ২১.৩৯ গড়ে তার শিকার ৫৮ উইকেট। সেই দলটিকে হারিয়ে শিরোপা জেতায় আরও বেশি উচ্ছ্বসিত তিনি।
“জীবনেও ভুলব না। ছেলেদের কেউই ভুলবে না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা, তারা অভিজ্ঞ দল, তাদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে। তাদের কেউ কেউ তখনও খেলছিল, যখন আমরা হাই স্কুলে ছিলাম। তাই এটা স্পেশাল, স্পেশাল, স্পেশাল। সত্যিই ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না।”