Published : 26 May 2025, 06:02 PM
বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর পর পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটে কি ফিরতে পারবেন? দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের সঙ্গে বোর্ডের সম্পর্ক শেষ নয় বলেই জানালেন বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান। তবে এই অলরাউন্ডারকে কবে দেখা যাবে বাংলাদেশ দলে বা আদৌ দেখা যাবে কি না, প্রশ্নটির উত্তর সময়ের হাতে ছেড়ে দিলেন।
গত ১ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের শেষ দিনের পর বাংলাদেশের জার্সিতে আর দেখা যায়নি সাকিবকে। বিদায়ী টেস্ট খেলতে ওই মাসেই তার দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পথে দুবাইয়ে তাকে থমকে যেতে হয়। নিরাপত্তা শঙ্কায় তার দেশে ফেরা হয়নি। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আর দেশে ফেরেননি বা ফিরতে পারেননি।
টেস্ট থেকে তার অবসর তাই ঝুলে আছে অনিশ্চয়তায়। দেশের বাইরের মাচগুলোতে তাকে খেলানো হবে কিনা, এসব নিয়ে ছিল নানামুখী আলোচনা। এর মধ্যেই কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতে গিয়ে তার বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার খবর আসে। ত্রুটিপূর্ণ অ্যাকশনের কারণে বোলিংয়ে নিষিদ্ধ হন তিনি।
গত জানুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন বলেছিলেন, শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবকে দলে রাখার উপযুক্ত মনে করেননি তারা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পুরোপুরি বিদায় নেওয়ার কথা ছিল সাকিবের। সেটিও এখন ঝুলে আছে।
বোলিং অ্যাকশন শুধরে আবার পরীক্ষায় উতরে বোলিংয়ের অনুমতি পান তিনি গত মার্চে। তবে কোথাও খেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। অবশেষ পিএসএল স্থগিত হওয়ার পর নতুন করে শুরু হলে বদলি হিসেবে তিনি জায়গা পান লাহোর কালান্দার্সে। দলটির হয়ে আসরে তিনটি ম্যাচ খেলেন ৩৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
ক্রিকেটে ফেরার পর বাংলাদেশ দলে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নও ফিরে আসছে। গুলশানে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সমাপনীতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার বললেন, সাকিবকে আরও কিছু ম্যাচে দেখতে চান তিনি।
“ডেফিনিটলি নট (সম্পর্ক শেষ নয়)। আমাদের যে ম্যানেজমেন্ট আছে, টিম ম্যানেজমেন্ট, টিম সেট আপ… আর সাকিব তো প্রথম টুর্নামেন্ট খেলল শোধরানোর পর। সেটা সামনে দেখার ব্যাপার। তবে সে বিশ্বমানের ক্রিকেটার। যে কোনো দলের জন্য সে একটা সম্পদ। আমাদের নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের বিবেচনায় সবসময় থাকে।”
“সাকিব শুধরে যে এলো, এরপর মাত্রই তো দুটি (তিনটি) ম্যাচ খেলল। আরও কয়েকটি ম্যাচ খেলতে দিন, তখন এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।”
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সের অবস্থা যাচ্ছেতাই। দেশের মাঠে জিম্বাবুয়ের কাছে একটি টেস্টে পরাজয়ের পর কদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে তারা হেরেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এর মধ্যে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে দীর্ঘদিন পর ১০ নম্বরে নেমে যাওয়ার দুঃসংবাদও এসেছে। সব মিলিয়ে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় ভাটার টান আসছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
ইফতেখারের কথায় ফুটে উঠল, এর চেয়ে তলানিতে নামার আর সম্ভব নয়। বিসিবির এই পরিচালকের আশা, সময়ের সঙ্গে পারফরফরম্যান্সের উন্নতি হবে।
“অ্যালার্মিং তো পরের কথা…। তবে অবশ্যই বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স একটা বড় ইস্যু জনপ্রিয়তার জন্য। আপনাদের বুঝতে হবে যে, এই মুহূর্তে আমাদের দলটা নতু্ন। চারজন সিনিয়র ক্রিকেটার (সাকিব, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ) চলে যাওয়ার পর একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। আমার মনে হয়, প্রতিভা আছে। আগেও বলেছি, অ্যাপ্লিকেশনের অভাব। যত ম্যাচ খেলবে, তারা উন্নতি করবে।”
“আমার মনে হয় আমরা যে পর্যায়ে আছি, আমাদের কেবল উন্নতিই হবে।”
বাংলাদেশ দল এখন আছে পাকিস্তানে। সেখানে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু বুধবার।