Published : 06 Jul 2025, 02:59 PM
ওভারের শেষ বলে দুই রান নিয়ে তখন ৯১ রানে অপরাজিত ফাফ দু প্লেসি। ইনিংসের একটি ওভার তখনও বাকি। সেঞ্চুরি করা তাই খুবই সম্ভব। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা ধরলেন টেক্সাস সুপার কিংস অধিনায়ক। সেঞ্চুরির হাতছানিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্রিজ ছেড়ে গেলেন তিনি স্বেচ্ছায়। রিটায়ার্ড আউট!
মেজর লিগ ক্রিকেটে এবার দুটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন দু প্লেসি। ৪১ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যানের সামনে সুযোগ ছিল আরেকটি শতরানের। কিন্তু মাঠ ছেড়ে যান তিনি দলের কথা ভেবে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ট্যাকটিক্যাল কারণে স্বেচ্ছায় মাঠ ছেড়ে যাওয়া বা কোনো ব্যাটসম্যানকে তুলে নেওয়া এখন খুব বিরল কিছু নয়। দু প্লেসির ঘটনাটি এই সংস্করণের ৪৫তম ‘রিটায়ার্ড আউট’। এবারের মেজর লিগ ক্রিকেটেই এভাবে মাঠ ছেড়ে গেছেন আন্দ্রে ফ্লেচার, ড্যারিল মিচেল ও উন্মুক্ত চাঁদ।
সেঞ্চুরি করার পর রিটায়ার্ট আউট হয়েছেন এখনও পর্যন্ত তিন ব্যাটার। তবে সেঞ্চুরির এত কাছে গিয়ে এভাবে মাঠ ছাড়ার নজির আর নেই। দু প্লেসি তাই সেদিক থেকে অনন্য।
সেঞ্চুরি ছাড়া এর আগে রিটায়ার্ড আউট হওয়া সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল গত আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ডেভন কনওয়ের ৬৯।
ফ্লোরিডায় এই ম্যাচে টেক্সাসের হয়ে দু প্লেসির ইনিংস এগোচ্ছিল প্রত্যাশিত পথেই। ৩২ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। এরপরও এগিয়ে যান বেশ ভালো গতিতেই। তবে শেষ দিকে এসে একটু খেই হারান তিনি। খানিকটা ক্লান্তিও যেন ভর করে তার ব্যাটে।
পঞ্চদশ ওভারে যখন দুটি চার মারেন, তার রান ছিল ৪৩ বলে ৮৪। সেঞ্চুরি তখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার।। কিন্তু পরের সময়টায় ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না ঠিকমতো। পরের ৯ বল খেলে করতে পারেন আর কেবল ৭ রান।
এরপরই শেষ ওভারের আগে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। তার জায়গায় মাঠে নামে ডনোভান ফেরেইরা।
ম্যাচের পর নিজের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেন টেক্সাস অধিনায়ক।
“বাড়তি দায়িত্ব আমি সবসময়ই উপভোগ করি এবং এটায় কখনোই ক্লান্ত হই না। তবে ডনোভান সাম্প্রতিক সময়ে খুব ভালো ছন্দে আছে এবং ওর ছয় মারার সামর্থ্য দারুণ। আমার চাওয়া ছিল, সে আমাদেরকে ১০-১৫ রান এনে দেবে (শেষ ওভারে)।”
“আমি এটির (রিটায়ার্ড আউট) অনেক বড় ভক্ত। খেলাটা এখন দিন দিন খুবই ট্যাকটিক্যাল হয়ে যাচ্ছে, অনেক কিছুই ভাবতে হয়। আমাদের স্কোয়াডের গভীরতা অনেক এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো ক্রিকেটার আমাদের আছে।”
শেষ ওভারে ফেরেইরান অবশ্য তিন বল খেলে তিন রানের বেশি করতে পারেনি।
৬ চার ও ৪ ছক্কায় দু প্লেসি করেন ৫২ বলে ৯১। ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে গত বিপিএল খেলে যাওয়া শুভাম রাঞ্জানের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৬৫। ২০ ওভারে ১৮৮ রান তোলে টেক্সাস।
সেই রান যথেষ্টরই বেশি প্রমাণিত হয় পড়ে। সিয়াটল ওর্কাস গুটিয়ে যায় ১৩৭ রানেই।
২৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন নিউ জিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার অ্যাডাম মিল্ন।
ম্যাচ-সেরা হন শেষ পর্যন্ত দু প্লেসিই।
এই ম্যাচে সেঞ্চুরি না হলেও বয়স ৪০ পেরিয়ে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন দু প্লেসি, ৩৯ পেরিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন তিনটি। দুটি কীর্তিই এই সংস্করণে রেকর্ড।