Published : 11 May 2025, 06:46 PM
অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথে পিচ করা ডেলিভারি স্কয়ার কাট করলেন তানজিদ হাসান। একই ধরনের পরের বলটিই আবার স্কুপ করে দিলেন বাঁহাতি ওপেনার। বিসিবি সময়সীমা ঠিক দেওয়ায় বেশিক্ষণ দেখা যায়নি তানজিদের শনিবারের ওই নেট সেশন। পরদিন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানালেন, টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই বিভিন্ন শট নিয়েই এখন কাজ করছেন ব্যাটসম্যানরা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ করার সপ্তাহ পেরোনোর আগেই গত সোমবার শুরু হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যাট-বলের ব্যস্ততা। সামনের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের জন্য অনুশীলন শুরু করে দেন লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকাররা।
এই প্রস্তুতি পর্ব অনেকটা রুদ্ধদ্বারই রেখেছে বিসিবি। সংবাদকর্মীদের জন্য প্রতিদিন শুধু ১৫ মিনিট করে রাখা হয়েছে অনুশীলন দেখার সুযোগ। তাই ক্রিকেটাররা অনুশীলনে কী নিয়ে কাজ করছেন তা দেখার খুব একটা সুযোগ নেই।
মিরপুরে রোববারের অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রথম প্রশ্নই করা হয়, ঠিক কী কী করা হচ্ছে অনুশীলনে। উত্তরে সালাউদ্দিন জানান, টি-টোয়েন্টির জন্য বিশেষ কিছু শট নিয়ে কাজ করার কথা।
“ছেলেদের স্কিলের উন্নতি নিয়ে কাজ করার খুব বেশি সময় পাই না আমরা। টানা এত সিরিজ থাকে। একটা থেকে আরেকটা সিরিজে যাওয়ার মতো বা স্কিল বাড়ানোর কাজ করার সুযোগ থাকে না। এইবার একটু সময় পেয়েছি স্কিল উন্নতি করার। কিছু ট্রেনিং সেশন রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের ফিটনেস লেভেলটা ধরে রাখার দিকে অনেক জোর দিয়েছি।”
“একইসঙ্গে তাদের স্কিলটা উন্নত করার কাজও করছি। সুনির্দিষ্ট করে টি-টোয়েন্টিতে আমাদের কিছু শট লাগবে যেগুলো আমরা হয়তো প্রস্তুতির অভাবে অ্যাপ্লাই করতে পারি না। সময়-সুযোগ পাই না। যে ধরনের উইকেটে আমরা খেলব, সেই ধরনের উইকেটে কোন ধরনের শটগুলো অ্যাপ্লাই করা দরকার, সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।”
জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্থানীয় ব্যাটসম্যানদের মানসিকতা নিয়ে নানান সময়ে হতাশা প্রকাশ করেন সালাউদ্দিন। বিপিএল চলাকালে ব্যাটসম্যানদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেশের অভিজ্ঞ কোচ।
একই সমস্যা এখনও রয়েই গেছে মনে করেন সালাউদ্দিন। তাই সেটি নিয়ে কাজ করে দ্রুত উন্নতির আশা তার।
“ড্রিল যদি বলেন, এখানে বসে বসে একশটা ড্রিল বানানো যাবে। এটা নতুন কিছু নয়। খেলাটা তো আসলে মাথায়। আমরা কীভাবে আসলে এগোচ্ছি, লজিকের মধ্যে ক্রিকেট খেলছি কিনা। আমার মনে হয় না, আমরা লজিক ছাড়া ক্রিকেট খেলি। এই জায়গাটা আসলে উন্নতি করা খুব সহজ কাজ নয়। স্কিল বা টেকনিক সবার জন্যই এক। সমস্যাটা আসলে মাথায়।”
“এটা কীভাবে উন্নতি করা যায়... এটা যে বললাম আর হয়ে গেল, তা কখনোই হবে না। এর জন্য আসলে অনেক কালচারাল ব্যাপার আছে। এই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। দায়িত্বের ব্যাপারটা আমরা চেষ্টা করছি ছেলেদের ওপর ছেড়ে দিতে। তাহলে তারা হয়তো দ্রুত শিখবে।”
ক্রিকেটারদের দায়িত্ববোধ বাড়াতে কোচিংয়ের নতুন একটি পন্থা অবলম্বন করার কথাও বললেন সালাউদ্দিন।
“একজন আরেকজনকে কোচিং করানোর একটা পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি। যেটার ফলে তারা নিজেরা ক্রিকেট নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। আমরা চেষ্টা করছি, সংস্কৃতিটা যেন একটু বদলায়। তাহলে তারা নিজেরাই শিখবে, দায়িত্ববান হবে এবং নিজেদের সমস্যা সমাধান করবে। এরকম হলে হয়তো আমরা দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।”