আইপিএল
Published : 25 Mar 2025, 04:12 PM
লাক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে প্রিন্স ইয়াদাভকে টানা ছক্কা ও চার মেরে সমীকরণটা ৬ বলে ৬ রানে নামিয়ে এনেছিলেন আশুতোষ শার্মা। তারপরও সবকিছু ভেস্তে যেতে পারতো; শেষ ওভারের শুরুতে যে স্ট্রাইকে ছিলেন একাদশ ব্যাটসম্যান মোহিত শার্মা। শেষ ওভারে ঘটনাবহুল প্রথম বলে দিল্লি ক্যাপিটালস শিবিরে চাপ আরও বেড়ে যায়। তবে ভড়কে যাননি আশুতোষ। নিজের সামর্থ্যে তার বিশ্বাস ছিল দৃঢ়, স্ট্রাইক পেলেই বল উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে পারবেন।
শেষ ওভারে বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদের প্রথম বলে অনেকটা বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় পারেননি মোহিত। স্টাম্পিংয়ের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও বল গ্লাভসে রাখতে পারেননি কিপার ও লাক্ষ্ণৌয়ের নতুন অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। পরে এলবিডব্লিউয়ের জন্য রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি তারা।
পরের বলেই মোহিত এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন আশুতোষকে, এবারও ফিল্ডিংয়ে গড়বড় করে ফেলে লাক্ষ্ণৌ। এরপরই আশুতোষ ছক্কায় ইতি টানেন নাটকীয় লড়াইয়ের। ২১০ রানের লক্ষ্যে তিন বল বাকি থাকতে জিতে যায় দিল্লি।
দলটির জয়ের নায়ক আশুতোষ ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ হিসেবে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫টি করে ছক্কা ও চারে ৩১ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে হন ম্যাচ সেরা। পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, নিজের সামর্থ্যে আস্থা রেখেই সফল হওয়ার কথা।
“আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এলবিডব্লিউর আপিল হোক কিংবা রান না হোক, এটা খেলারই একটা অংশ। এটা আমার ব্যাটিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না। তাই আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, তিনি (মোহিত) যদি সিঙ্গেল নিতে পারেন, আমি ছক্কা মারতে পারব। নিজের সামর্থ্যের ওপর আমার আস্থা ছিল।”
“আমি ইনিংসটি দারুণ উপভোগ করেছি। কঠোর পরিশ্রম ফল দিয়েছে।”
দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ১০ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় দিল্লি। ৬৫ রানের মধ্যে বিদায় নেয় তাদের পাঁচ ব্যাটসম্যান। আশুতোষ যখন ক্রিজে যান দিল্লির তখন প্রয়োজন ৮০ বলে ১৪৫ রান।
এক প্রান্ত আগলে রেখে শুরুতে ধীরলয়ে এগোন আশুতোষ। প্রথম ২০ বলে ২০ রান করা ব্যাটসম্যান পরে তোলেন ঝড়। অবিশ্বাস্যভাবে পরের ১১ বলে ৪৬ রান করে দলকে জেতান ২৬ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
“আমি শুধু মৌলিক দিকগুলো অনুসরণ করি এবং নিজের সামর্থ্যে বিশ্বাস রাখি। কেবল প্রক্রিয়া অনুসরণ করছিলাম। ম্যাচ যতটা সম্ভব গভীরে টেনে নিতে চেয়েছিলাম, যাতে শেষের ওভারগুলোয় আক্রমণ করতে পারি।”
আইপিএলের গত আসরে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে ১১ ম্যাচে ১৬৭.২৫ স্ট্রাইক রেটে ১৮৯ রান করেন আশুতোষ। তবে সেবার ম্যাচ শেষ করার দায়িত্বটি ঠিকঠাক পালন করতে পারেননি তিনি। তাই বছরজুড়ে সেই জায়গা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে এবার নতুন দলের হয়ে প্রথম ম্যাচেই নিজেকে মেলে ধরলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
“গত বছরটা সত্যিই ভালো কেটেছে, কিন্তু সেটা এখন আমার জন্য অতীত। আমি সেখান থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিয়েছি এবং নিজেকে নিয়ে কাজ করেছি, আমার যেসব দুর্বলতা ছিল, সেগুলো ঠিক করার জন্য। ঘরোয়া ক্রিকেটে যা করেছি, তাই কাজে লাগাচ্ছি।”
“গত মৌসুমে বেশ কয়েকবার ম্যাচ শেষ করতে পারিনি। সারা বছর আমি এই জায়গায় মনোযোগ দিয়েছি এবং এমন কিছুর (এই নাটকীয় জয়) কল্পনা করেছি। বিশ্বাস ছিল, শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে পারলে যেকোনো কিছুই হতে পারে।”