আইপিএল
Published : 25 May 2025, 10:18 PM
ঝড়ের শুরুটা ট্রাভিস হেডের ব্যাটে। খুনে ব্যাটিংয়ে তিনি খেললেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। এরপর ব্যাটকে মুগুর বানিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের তুলাধুনা করলেন হাইনরিখ ক্লসেন। তাণ্ডব চালিয়ে গড়লেন আইপিএলে যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি। তাদের সৌজন্যে রান পাহাড় গড়ল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
দিল্লিতে রোববার কলকাতার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৭৮ রান করেছে হায়দরাবাদ। আইপিএলের ইতিহাসে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এই তালিকার প্রথম দুটি স্থানেও হায়দরাবাদের নাম। চলতি আসরে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২৮৬ রান করে তারা। গত বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে তাদের করা ৩ উইকেটে ২৮৭ রান আইপিএলে রেকর্ড।
আরুন জেটলি স্টেডিয়ামে কলকাতার বিপক্ষে এদিন তিনে নেমে ৩৯ বলে ১০৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন ক্লসেন। ৯৬ রানই করেন তিনি বাউন্ডারি থেকে, ৯টি ছক্কার পাশাপাশি চার মারেন ৭টি।
অপরাজিত ইনিংসটির পথে ৩৭ বলে তিন অঙ্কের সীমানায় পা রাখেন ক্লসেন। দক্ষিণ আফ্রকান কিপার-ব্যাটসম্যানের সমান বল খেলে আইপিএলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ভারতের ইউসুফ পাঠান, ২০১০ সালে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে।
তাদের চেয়ে কম বলে আইপিএলে সেঞ্চুরি আছে দুইজনের। এ বছরই ৩৫ বলে তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পান রাজস্থানের তরুণ সেনসেশন বৈভাব সুরিয়াভানশি, গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে। আর এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি ক্রিস গেইলের, ২০১৩ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৩০ বলে শতক ছুঁয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান তারকা।
আইপিএলে এটি ক্লসেনের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আগেরটি করেছিলেন ২০২৩ সালে। স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টি এনিয়ে তৃতীয়বার শতকের স্বাদ পেলেন তিনি।
ইনিংস শুরু করতে নেমে ৪০ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলার পথে ৬টি করে ছক্কা ও চার মারেন হেড। এবারের আইপিএলে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের এটি তৃতীয় ফিফটি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা হায়দরাবাদ উড়ন্ত সূচনা পায় হেড ও আভিশেক শার্মার ব্যাটে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আনরিখ নরকিয়াকে একটি ছক্কা মারেন হেড, পরে দুই চার মারেন আভিশেক।
বৈভাব আরোরাকে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান হেড। পরের ওভারে হার্শিত রানার প্রথম চার বলে মারেন তিনটি চার। আভিশেকও বসে থাকেননি। নরকিয়াকে টানা দুই চার মারেন তিনি। পাওয়ার প্লেতে ৭৯ রান তুলে ফেলে হায়দরাবাদ।
সপ্তম ওভারে সুনিল নারাইনকে টানা দুই ছক্কার পর আরেকটির চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আভিশেক। ২ ছক্কা ও ৪টি চারে ১৬ বলে ৩২ রান করেন হায়দরাবাদ ওপেনার। তাতে ভাঙে ৯২ রানের উদ্বোধনী জুটি।
ভারুন চক্রবর্তীকে ছক্কায় ২৬ বলে ফিফটিতে পা রাখেন হেড। ওই ওভারেই ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু ক্লসেনের খুনে ইনিংসের পথচলা।
দশম ওভারে ভারুনকে ছক্কায় ওড়ান হেড। ওই ওভারের শেষ চার বলে তিনটি চার মারেন ক্লসেন। আন্দ্রে রাসেলকে ছক্কার পর হার্শিতকে দুটি ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে ১৭ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ক্লসেন।
নারাইনের বলে ছক্কার চেষ্টায় শেষ হয় হেড-ঝড়। ভাঙে ৩৫ বল স্থায়ী ৮৩ রানের জুটি। এরপর ইশান কিষানকে নিয়ে ৩৬ বলে ৮৩ রানের জুটি উপহার দেন ক্লসেন।
আরোরাকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন কিষান। পরে নরকিয়াকে চারের পর ছক্কায় ওড়ান তিনি। এর মাঝে নারাইনকে টানা দুই বলে উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে ফেলেন ক্লসেন।
ক্লসেনের সামনে বল ফেলার জায়গাই যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না কলকাতার বোলাররা। ভারুনকে দুটি ছক্কা মারা ক্লসেন টানা ছক্কা-চার হাঁকান রাসেলকে। ৪টি চার ও এক ছক্কায় ২০ বলে ২৯ রান করে পরের ওভারে থামেন কিষান।
ওই ওভারেই ডাবল নিয়ে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া নেন ক্লসেন। শেষ ওভারে নরকিয়াকে ছক্কা ও চার মারেন আঙ্কিত ভার্মা, ক্লসেন মারেন এক চার।
হায়দরাবাদ ও কলকাতা; দুই দলেরই আইপিএল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেক আগে। এটি আসরে তাদের শেষ ম্যাচ।