Published : 04 Feb 2019, 02:41 PM
বিপিএলের এলিমিনেটরে চিটাগং ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। এ দিনই দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারবে যে দল, তাদের বিপক্ষে বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে ঢাকা।
মিরপুরে সোমবার নারাইনের দারুণ বোলিংয়ে ১৩৫ রানে আটকে যায় চিটাগং। পরে ওপেনিংয়ে নেমে নারাইন খেলেন ১৬ বলে ৩১ রানের ক্যামিও। সঙ্গে উপুল থারাঙ্গার ফিফটিতে ঢাকা জিতে যায় ২০ বল বাকি রেখে।
এই হারে শেষ হলো চিটাগংয়ের চমকপ্রদ অগ্রযাত্রা। এবারের বিপিএলে তাদের অংশ নেওয়াই একসময় ছিল সংশয়ে। শেষ পর্যন্ত দল গড়লেও রসদ ছিল না সমৃদ্ধ। কিন্তু শুরু থেকেই দারুণ খেলে তারা জায়গা করে নিয়েছিল শীর্ষ চারে।
চিটাগংকে ভুগতে হয়েছে আগ্রাসী আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ফিরে যাওয়ায়। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলে ক্যামেরন দেলপোর্তের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন টুর্নামেন্টে দলের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি।
তবে কাজে লাগেনি এই বদল। রুবেল হোসেনকে দারুণ এক পুল শটে বাউন্ডারি মারলেও ওই ওভারেই ইয়াসির আউট হন বাইরের বল খোঁচা মেরে।
তিনে নামা সাদমান ইসলামকে নিয়ে দেলপোর্ত ভালোই টেনে নিচ্ছিলেন দলকে। রাসেলকে টানা তিন বলে বাউন্ডারি মারেন দেলপোর্ত, ছক্কা মারেন রুবেলকে। তার ২৭ বলে ৩৬ রানের সম্ভাবনাময় ইনিংস শেষ হয় দৃষ্টিকটু এক রান আউটে।
চিটাগংয়ের পথচ্যুতির সেটিই শুরু। নারাইনের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন মুশফিকুর রহিম। ১৯ বলে ২৪ রান করা সাদমান উইকেট দিয়ে আসেন নারাইনকে উড়িয়ে মারতে গিয়েই। দাসুন শানাকা তুলতে পারেননি ঝড়।
বিপজ্জনক রবি ফ্রাইলিঙ্কের জন্য হয়তো নারাইনের শেষ ওভারটি রেখে দিয়েছিলেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব। চোট কাটিয়ে ফেরা রবি ফ্রাইলিঙ্ক ও হার্ডাস ভিলিওনকে এক ওভারেই ফিরিয়ে চিটাগংকে দমিয়ে দেন নারাইন।
চিটাগংয়ের রান তখন ১২০ ছোঁয়া নিয়েই টানাটানি। তখনও পর্যন্ত ধীরেসুস্থে খেলতে থাকা মোসাদ্দেক হোসেন শেষ দিকে এনে দেন দ্রুত কিছু রান। শেষ ওভারে বাঁহাতি পেসার কাজি অনিককে মারেন টানা তিন বলে এক ছক্কা ও দুই চার। মোসাদ্দেকের ৩৫ বলে ৪০ রানের ইনিংসটি দলকে এনে দেয় লড়ার মতো রান।
তবে নারাইন ও থারাঙ্গার সৌজন্যে লড়াই জমতেই দেয়নি ঢাকা। চিটাগংয়ের বোলিংয়ের মূল অস্ত্র ফ্রাইলিঙ্কের প্রথম ওভারেই তিনটি চার মারেন দুজন মিলে। পরের ওভারে নাঈম হাসানকে দুটি চার ও এক ছক্কা মারেন নারাইন।
দুজনের ব্যাটিংয়ে ৪ ওভারেই ৪৪ তুলে ফেলে ঢাকা। চিটাগংয়ের সম্ভাবনারও একরকম শেষ প্রায় ওখানেই।
চিটাগংয়ের পেসার খালেদ হোসেন পরে চেষ্টা করেছেন দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ করা নারাইনকে ফিরিয়েছেন মেডেন ওভারে। তিনে নেমে ১৩ বলে ২০ রান করেছেন রনি তালুকদার। তাকে ও সাকিবকে পরপর দুই বলে ফেরান খালেদ।
কিন্তু লক্ষ্য ছোটো ছিল বলে ঢাকা চাপেই পড়েনি সেভাবে। আগের ম্যাচে ৪২ রান করা থারাঙ্গা এবার পেরিয়ে যান ফিফটি। ৪৩ বলে ৫১ রান করা ওপেনারকে থামান নাঈম।
তবে ঢাকাকে থামানোর উপায় ছিল না। কাইরন পোলার্ডকে নিয়ে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন নুরুল হাসান সোহান। ঢাকা এগোয় ফাইনালের পথে এক ধাপ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (ইয়াসির ৮, দেলপোর্ত ৩৬, সাদমান ২৪, মুশফিক ৮, মোসাদ্দেক ৪০, শানাকা ৭, ফ্রাইলিঙ্ক ১, ভিলিওন ১, নাঈম ৬*, আবু জায়েদ ১*; রাসেল ২-০-২১-০ সাকিব ৪-০-১১-০, রুবেল ৩-০-২৭-১, শুভাগত ২-০-১৩-০, নারাইন ৪-০-১৫-৪, মাহমুদুল ১-০-১০-০, অনিক ৪-০-৩৬-১)।
ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৬.৪ ওভারে ১৩৬/৪ (থারাঙ্গা ৫১, নারাইন ৩১, রনি ২০, সাকিব ০, সোহান ২০*, পোলার্ড ৭*; ফ্রাইলিঙ্ক ১-০-১৩-০, নাঈম ৩-০-২৮-১, আবু জায়েদ ৩-০-২২-০, ভিলিওন ৪-০-৩৩-০, খালেদ ৪-১-২০-৩, দেলপোর্ত ১-০-১১-০, শানাকা ০.৪-০-৬-০)।
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সুনিল নারাইন