Published : 11 Oct 2022, 04:57 PM
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে একাই টানলেন নাদিফ চৌধুরি। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরতে হলো হতাশা নিয়ে। পরে আবারও বল হাতে জ্বলে উঠলেন সুমন খান। তার সঙ্গে সালাউদ্দিন সাকিলও রাখলেন অবদান। রংপুর বিভাগকে গুঁড়িয়ে দুই দিনেই জয় তুলে নিল ঢাকা বিভাগ।
মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের ম্যাচে মঙ্গলবার ঢাকার জয় ইনিংস ও ৬২ রানে।
প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে গুটিয়ে যাওয়া রংপুর ব্যাট হাতে আবারও হলো ব্যর্থ। এবার তারা আরও বাজে ব্যাটিং করে থেমে গেল স্রেফ ৫৬ রানে। একমাত্র ইনিংসে ঢাকা করে ২১০ রান।
শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে চমৎকার বোলিং উপহার দিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন সুমন। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া ঢাকার এই পেসার এবার নেন ১৬ রানে চারটি। আরেক পেসার সাকিলেরও দ্বিতীয় ইনিংসে প্রাপ্তি ১৬ রানে ৪ উইকেট।
ঢাকাকে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেওয়ার কারিগর নাদিফ। সাত নম্বরে নেমে লড়াকু এক ইনিংস উপহার দেন তিনি। ৩ ছক্কা ও ১০ চারে ১৪১ বলে করেন ৯০ রান।
৫ উইকেটে ১২২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে খেলতে নামা ঢাকা শুরুতেই খায় হোঁচট। দিনের প্রথম বলেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ৩০ রানে থাকা নাদিফ।
কিছুক্ষণ পর টানা দুই ওভারে সুমন ও রিপন মণ্ডলকে হারায় তারা। পরে আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে হয় নাদিফকে। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান তাইবুর রহমান। রবিউল হকের বলে কট বিহাইন্ড হন ৪ চারে ৪২ রান করে।
তখনও দুইশ বহু দূর ঢাকার জন্য। ১৩৮ রানে ৮ উইকেট হারানো দলকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগিয়ে নেন নাদিফ। আরিফুল ইসলামের এক ওভারে চারটি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছক্কা। ফিফটি পূর্ণ করেন ৭৯ বলে।
মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থেকে নাদিফকে দারুণ সঙ্গ দেন সাকিল। দুইজনের জুটিতে আসে ৭২ রান, রান আউটে কাটা পড়া সাকিলের যেখানে অবদান ৪৬ বলে ৫।
তখনও সেঞ্চুরি করার সুযোগ ছিল নাদিফের। কিন্তু তরুণ পেসার মুশফিক হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন তিনি।
নাদিফকে ফিরিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান মুশফিক, ৪৮ রান দিয়ে।
১১৮ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুর নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে উইকেট। তাদের হয়ে ওপেনার মাইশুকুর রহমান ছাড়া কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
জাহিদ জাভেদকে কট বিহাইন্ড করে প্রতিপক্ষ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন সাকিল। পরে তিনি ফেরান আরিফুল হক, রিশাদ হোসেন ও মুশফিককে।
রংপুরের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের তিন জনই সুমনের শিকার। তানবীর হায়দার, নাসির হোসেন ও আকবর আলিকে ফেরানোর পর তিনি আউট করেন রবিউলকে।
আগের দিন ব্যাটিংয়ের সময় পায়ে টান লাগায় মাঠ ছেড়ে যাওয়া নাঈম ইসলাম এদিনও খেলতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ৯২
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৭৩.১ ওভারে ২১০ (আগের দিন ১২২/৫) (তাইবুর ৪২, নাদিফ ৯০, সুমন ২, রিপন ০, সালাউদ্দিন ৫, অপু ০*; রবিউল ১৮-৬-৪২-৩, মুশফিক ১৯.১-৪-৪৮-৫, আরিফুল ৯-১-৪৪-০, হাসিম ১৮-৪-২৭-১, নাসির ৪-০-১৫-০, রিশাদ ৫-১-১৮-০)
রংপুর বিভাগ ২য় ইনিংস: ২৬.১ ওভারে ৫৬/৯ (মাইশুকুর ১২, জাহিদ ৪, তানবির ৯, নাসির ৫, আকবর ৩, আরিফুল ৮, রবিউল ২, রিশাদ ১, আবু হাসিম ৬*, মুশফিক ০, নাঈম অনুপস্থিত; সুমন ১১-৪-১৬-৪, সাকিল ৯.১-৫-১৬-৪, রিপন ৬-১-১৮-১)
ফল: ঢাকা বিভাগ ইনিংস ও ৬২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সুমন খান