Published : 28 Jun 2025, 04:24 PM
জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ৬ রান। লেগ স্টাম্পের ওপরে কাইরন পোলার্ডের স্লোয়ার ডেলিভারি হাঁটু গেড়ে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কায় ওড়ালেন শিমরন হেটমায়ার। ব্যাট ও হেলমেট বাতাসে ছুড়লেন তিনি। ডাগআউট থেকে দৌড়ে মাঠে ঢুকে গেলেন দলের অন্য ক্রিকেটাররা। হেটমায়ারকে ঘিরে উদযাপনে মেতে উঠলেন তারা। চোটের ছোবল সামলে, প্রায় একার লড়াইয়ে, দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।
মেজর লিগ ক্রিকেটে এই ম্যাচে নায়ক হতে পারতেন আরেক ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান। বিস্ফোরক সেঞ্চুরি উপহার দেন এমআই নিউ ইয়র্ক অধিনায়ক। পুরান (৮ ছক্কা ও ৭ চারে ৬০ বলে অপরাজিত ১০৮) ও তাজিন্দার সিংয়ের (৮টি করে ছক্কা ও চারে ৩৫ বলে ৯৫) বিধ্বংসী দুটি ইনিংসে ২০ ওভারে ২৩৭ রানের পুঁজি গড়ে নিউ ইয়র্ক।
সেই লক্ষ্য সিয়াটল ওরকাস শেষ বলে ছুঁয়ে ফেলে ৩ উইকেট হাতে রেখে। ছয় নম্বরে নেমে ৯ ছক্কা ও ৫ চারে ৪০ বলে অপরাজিত ৯৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হেটমায়ার।
Shimron Hetmyer was the star of the show, leading the @MLCSeattleOrcas to their first win of the 2025 MLC season on the back of a critical six ⭐ pic.twitter.com/f7XAC05q0E
— Cognizant Major League Cricket (@MLCricket) June 28, 2025
যুক্তরাষ্ট্রের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় জয় এটি। চলতি আসরেই টেক্সাস সুপার কিংসের বিপক্ষে ওয়াশিংটন ফ্রিডমের ২২১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয় ছিল আগের রেকর্ড।
খুব কঠিন এক সময়ে এলো সিয়াটলের এই জয়। দুই আসর মিলিয়ে টানা ১০ ও চলতি আসরে প্রথম পাঁচ ম্যাচ হেরে টালমাটাল হয়ে পড়েছিল তারা।
দলের এমন বাজে পথচলায় নিউ ইয়র্ক ম্যাচের আগে কোচের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ম্যাথু মটকে। একই সঙ্গে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান হাইনরিখ ক্লসেন। নেতৃত্ব পান সিকান্দার রাজা। তার হাত ধরে প্রথম ম্যাচেই দীর্ঘ খরা কাটিয়ে স্মরণীয় জয় পেল সিয়াটল।
ডালাসে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালের এই ম্যাচে বড় লক্ষ্য তাড়ায় সিয়াটলের দুই ওপেনার ভালো করতে পারেননি। কাইল মেয়ার্স সচল রাখেন রানের চাকা। রাজা নিজেকে ওপরে তুলে ব্যাটিংয়ে নামেন চার নম্বরে। প্রথম বলে তিনি কোনো রান করতে পারেননি। এরপর টানা সাত বলে মারেন ৬টি চার ও একটি ছক্কা। ৯ বলে ৩০ রানের ক্যামিও খেলে ফেরেন জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার।
পাওয়ার প্লেতে সিয়াটল তুলে ফেলে ৩ উইকেটে ৮৬ রান। মেয়ার্স ২০ বলে ৩৭ রান করে ফেরার পর নবম ওভারে উইকেটে যান হেটমায়ার। সদ্য সাবেক অধিনায়ক ক্লসেন ১৩ বলে ২৬ রান করে দলকে রাখেন কক্ষপথে।
হেটমায়ার আউট হতে পারতেন ২২ রানে, কিন্তু ক্যাচ ফেলেন তাজিন্দার। জীবন পেয়ে পরের তিন বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
হেটমায়ারের রান যখন ১৫ বলে ৩৮, পায়ে টান লাগে তার। নিতে হয় ফিজিওর সেবা-শুশ্রূষা। ক্র্যাম্প নিয়েই ব্যাটিং চালিয়ে যান তিনি। আসরে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন ২২ বলে।
শেষ পাঁচ ওভারে সিয়াটলের প্রয়োজন ছিল ৬০ রান। সেখান থেকে প্রায় একা হাতে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় নিয়ে যান হেটমায়ার।
শেষ দুই ওভারে দরকার যখন ৩২ রান, ১৯তম ওভারে যুক্তরাষ্ট্রের পেসার এহসান আদিলকে তিনটি ছক্কা মারেন হেটমায়ার।
শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৯ রান। পোলার্ড প্রথম চার বলে দেন স্রেফ ১ রান। ২ বলে চাই ৮। পঞ্চম বলে দুই রান নেওয়ার পর শেষ বলে ছক্কায় উল্লাসে মেতে ওঠেন হেটমায়ার।
২৮ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের ২৭৬ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস এই অপরাজিত ৯৭। একটি সেঞ্চুরি আছে তার।