বিপিএল
Published : 26 Dec 2024, 04:03 PM
বোলারদের তালিকায় সবার ওপরে, ব্যাটসম্যানদের মধ্যে চার নম্বরে। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চারবার সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জয়ী। সংশয় ছাড়াই বলে দেওয়া যায় বিপিএলের সবসময়ের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। কিন্তু সামনের আসরে তার খেলা নিয়ে জেগেছে অনিশ্চয়তা। কারণ দেশে ফেরারই যে অবস্থা নেই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের। যা দেখে খারাপই লাগছে খালেদ মাহমুদের।
বিপিএলের ১১তম আসরের আগে বৃহস্পতিবার অনুশীলন শুরু করেছে দলগুলো। মিরপুরের বিসিবি জাতীয় একাডেমি মাঠে ঢাকা ক্যাপিটালসের সেশন শেষ হওয়ার আগেই চলে আসে চিটাগং কিংস। নতুন আসরের জন্য সাকিবকে সরাসরি চুক্তিতে দলে ভিড়িয়েছে তারা। কিন্তু প্রথম দিনের অনুশীলনে ছিলেন না সাকিব।
থাকবেনই বা কী করে। গত জুলাইয়ের পর যে আর দেশেই ফিরতে পারেননি বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য দেশে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অগাস্টে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা শঙ্কায় তাকে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়।
এছাড়া সরকার পতনের পর হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য হওয়া সাকিবকে। মামলা মাথায় নিয়েই অবশ্য অক্টোবরে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দেশের উত্তাল পরিস্থিতির কারণে আসতে পারেননি।
এখন আসন্ন বিপিএলেও তার অংশগ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। চিটাগংয়ের পক্ষ থেকে যদিও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষার কথা বলা হচ্ছে। তবে বাস্তবতা হলো, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে সাকিবের বিপিএল খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সেটি ভালোভাবেই জানেন ও বোঝেন ঢাকা ক্যাপিটালসের প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ।
দলের অনুশীলন শেষে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, সাকিব না থাকলে বিপিএলে দর্শক আগ্রহে ভাটা পড়তে পারে।
“সারা দেশে সাকিবিয়ান (সাকিবের সমর্থক) তো অনেক। (দর্শক আগ্রহে) একটু তো প্রভাব ফেলবেই। কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব। বিশ্বের এক নম্বর ক্রিকেটার। সাকিবের না থাকা তো আমাদের সবার জন্যই একটা...”
“সাকিব সারা জীবন ক্রিকেট খেলবে না এটা সত্যি কথা। তবে সে যত দিন খেলে যাচ্ছে, এই সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলতে পারছে না, এটা আমাদের জন্য একটা ব্যর্থতা মনে করি।”
তবে যে কারণে দেশে আসতে পারছেন না সাকিব, সেটি মানছেন খালেদ মাহমুদও। এই প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, ৭-৮ মাসের রাজনীতিবিদ পরিচয়ের চেয়ে সাকিবের ক্রিকেটার স্বত্বাকেই বড় করে দেখা উচিত ছিল সবার।
“হয়তো ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে রাজনীতি করেছে। তবে সারা বাংলাদেশ ওকে চেনে ক্রিকেটার হিসেবে। ওর উত্থান ক্রিকেটার হিসেবে। রাজনীতি করেছে, কতটা অন্যায় করেছে সেটা আমি বলতে পারব না। তবে ওই ৭-৮ মাস সময়টা ওর এত লম্বা ক্যারিয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে ফেললাম, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে অবাক লাগে।”
“আমরা যদি একটু বিচক্ষণতার পরিচয় দিতাম... দেশের একটা ক্রিকেটার, দেশের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট খেলতে পারবে না। ক্রিকেটাররাও সবাই হতাশ আমার মনে হয়। সবাই হয়তো মাইকের সামনে বলতে পারে না। কিন্তু ক্রিকেটাররাও হতাশ। কারণ সব ক্রিকেটারের সঙ্গেই সাকিবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সবাইকে সব ভাবে সহযোগিতা করে সে। তো খারাপ লাগছে আর কি!”
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী সোমবার শুরু হবে বিপিএলের নতুন আসর। প্রথম দিনই দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি হবে খালেদ মাহমুদের ঢাকা।