Published : 21 Aug 2022, 10:34 PM
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় বছর কাটিয়েও এখনও পায়ের নিচে শক্ত মাটি পাননি মোসাদ্দেক হোসেন। থিতু হতে পারেননি কোনো সংস্করণেই। নড়বড়ে জায়গা পাকা করতে এখনও ঘাম ঝরাচ্ছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েতে সবশেষ দুটি সিরিজ থেকে এই অলরাউন্ডার আশাবাদী, ভালো করবেন এশিয়া কাপে।
কাজটা যদিও সহজ হওয়ার কথা নয়। ২০১৬ সালে অভিষেকের পর থেকে ধারাবাহিকতার দেখা তিনি পাননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। কোনো সংস্করণেই তার গড় ৩০ ছুঁতে পারেনি। টেস্টে ২৮.৮৩ গড়ে করেছেন কেবল ১৭৩ রান। অভিষেকের ৭৫ রান এখনও সেরা।
ওয়ানডেতে ২৫.৩৬ গড়ে করেছেন ৬৩৪ রান। তিন ফিফটির সবচেয়ে বড়টিতে করেছেন অপরাজিত ৫২। টি-টোয়েন্টিতে ১৮.৩০ গড় ও ১০৯.৬৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৩৮ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩৪।
টেস্টে কোনো উইকেট পাননি। ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ১৩ উইকেটের পাঁচটি নিয়েছেন এক ম্যাচ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে।
তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি বরাবরই দারুণ ধারাবাহিক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এখনও গড় ৫৪.২৬। আছে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে গড় ৪০.৩৪। তিন সেঞ্চুরির পাশে আছে ২৭ ফিফটি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর অনেক জয়ের নায়ক তিনি। বেশ কবার হারের মুখ থেকে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে।
বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক শিরোপারও নায়ক মোসাদ্দেক। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিস্ফোরক ফিফটিতে তিনিই দলকে এনে দিয়েছিলেন অসাধারণ এক জয়।
বল হাতেও তার কার্যকারিতা বেশ। মাথা খাটিয়ে বল করতে পারেন। সঙ্গে ফিল্ডিংও খারাপ না। সব মিলিয়ে দলের উপযোগী হওয়ার সব উপকরণ তার মধ্যে আছে। তবে এই ২৬ বছর বয়সে এসেও দলে আছেন আসা-যাওয়ার মধ্যে।
বেশ কিছুদিন ধরের বাইরে থাকার পর আপাতত তিন সংস্করণেই দলে আছেন। সুযোগও মিলছে কম-বেশি। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছেন দুটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। পরে জিম্বাবুয়েতে তিন টি-টোয়েন্টির সঙ্গে খেলেছেন একটি ওয়ানডে।
ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি। দুই সংস্করণে পাঁচ ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ কেবল ১৫। তবে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা ছিল তার। এই সময়ে খেলা ৮ ম্যাচের কেবল একটিতে উইকেট পাননি। এক ম্যাচে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মোসাদ্দেক বলেন, সবশেষ দুটি সফরের পারফরম্যান্স আশা দেখাচ্ছে তাকে।
“ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে সফরে যে জায়গাতে সুযোগ পেয়েছি, ওই জায়গায় ভালো করার চেষ্টা করেছি, শেষ দুইটা সিরিজ আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ভালো গেছে। সেই জায়গা থেকে আমি আত্মবিশ্বাসী, এশিয়া কাপে হয়তো ভালো করব।”
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ খেলবে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে। অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলে মোসাদ্দক বুঝে নিয়েছেন তার কাছে দলের চাওয়া। এবার মাঠে সেই প্রত্যাশা পূরণের পালা।
“যার যার যে ভূমিকা আছে, সেই জায়গায় কেমন কী হতে পারে বা সেই জায়গায় আমার কী করণীয় থাকতে পারে, সেই জিনিসগুলো আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। সবাইকেই মোটামুটি তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের কাজ সেটা আমরা কতটুকু মাঠে করতে পারি।”
“ভূমিকার যে বিষয়টি থাকে সেটা আমি হয়তো এমন হতে পারে ছয় নম্বরে ব্যাটিং করছি, একদিন হয়তো চার নম্বরে ব্যাটিং করতে হতে পারে। সেটা খুব বেশি হয়তো কঠিন না। এটাই আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।”