Published : 04 Feb 2025, 09:50 PM
সংগঠক, ক্রীড়াবিদদের আপত্তির মুখে চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দুই কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার দুপুরে স্টেডিয়াম পরিদর্শনের কথা থাকলেও তারা নির্ধারিত সময়ে না এসে পরির্দশনে এসেছিলেন বিকালে।
এদিকে বাফুফেকে স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে স্টেডিয়াম এলাকায় মঙ্গলবারও মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন ইভেন্টের সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়, সংগঠকম ক্রীড়ানুরাগী ও রাজনীতিকরা।
আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২ শর্তে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে ‘লিজ’ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। গত ২ জানুয়ারি চিঠির মাধ্যমে বাফুফেকে মাঠ বরাদ্দের বিষয়টি জানানো হয়।
এ ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠক, বর্তমান ও সাবেক খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
গত ৩০ জানুয়ারি স্টেডিয়ামের সামনে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে বাফুফেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ মন্তব্য করে তা বদলানোর দাবি তোলেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
ওই দিনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নতুন একটি সিদ্ধান্ত জানায়, যেখানে বাফুফের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্থানীয় জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে খেলাধুলা আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নতুন এ সিদ্ধান্তটিও মানতে নারাজ ক্রীড়া সংগঠকরা।
স্টেডিয়াম বরাদ্দ পেয়ে তা পরিদর্শনের জন্য ফুটবল ফেডারেশনের ম্যানেজার (কম্পিটিশন) জাবেদ বিন তাহের আনসারী ও সহকারী ম্যানেজার (প্রজেক্ট) তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকীকে প্রতিনিধি হিসেবে স্টেডিয়াম পরির্দশনের জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।
তবে এ বিষয়ে বাফুফে প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হওননি।
তাদের একজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, “আমরা স্টেডিয়ামে গিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।”
চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাফুফের দুই প্রতিনিধি দুপুরে আসার কথা থাকলেও তারা আসেননি। শুনেছি বিকালে তারা স্টেডিয়ামে এসে আমাদের অফিস কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে চলে গেছেন।”
‘সিদ্ধান্ত না পাল্টালে কঠোর আন্দোলন’
এদিকে সকালে স্টেডিয়াম চত্বরে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
তিনি বলেন, “এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে ২৫ বছরের জন্য লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের সকল ক্লাব ও ক্রীড়ামোদী জনগণ হতবাক হয়েছে। স্টেডিয়াম বরাদ্দের ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ ক্ষোভে ফুসে ওঠেছে।
“চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে আলোচনা না করে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়া চট্টগ্রামবাসী কোনোদিন মেনে নেবে না। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করতে হবে।”
চুক্তি বাতিল করা না হলে চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বক্কর।
মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও মো. কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অংশ নেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিয়াজ মো. খান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহ সভাপতি শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী, হাফিজুর রহমান, সৈয়দ আবুল বশর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন মো. আলমগীর, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, ক্রীড়া সংগঠক মশিউল আলম স্বপনসহ ক্রীড়া সংঠকরা।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম: ক্রীড়া পরিষদের নতুন নির্দেশনায় ক্রীড়ামোদীদের মনে ‘আঘাত’
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে ক্রীড়া পরিষদের সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম ফুটবলের জন্য বরাদ্দ, অন্য খেলার কী হবে?