Published : 19 Nov 2024, 05:02 PM
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢালাও মামলায় কোনো বাছবিচার ছাড়াই আসামি করা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলছেন, এসব অধিকাংশ মামলাই করছে জনগণ।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের বিষয়ে এক প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “এগুলো মেক্সিমাম মামলা ভুয়া। আগে পুলিশ ভুয়া মামলা করত। ১০টা নাম দিত, ৫০টা বেনামী দিত। এখন জনগণ দিচ্ছে ৫০টা বেনামী। এটাতো হচ্ছে… এজন্যইতো আমরা টাকা দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিছি।”
এসময় পাল্টা প্রশ্ন করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এরকম (মামলা) যাদের আছে তাদের কারো কি ধরা হইছে? একচুয়্যাল মামলা হলে আপনারেতো ধরার কথা, আপনাকেতো ধরে নাই। এই কেইসতো আমার পুলিশ, র্যাব, আর্মি, আনসার দেয় নাই। এটাতো আপনাদের ভেতর থেকে কেউ শত্রুতা করে দিছে।
“এজন্য আপনি যাতে কোনো অবস্থায় হেরাজ না হন, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এজন্যতো আপনার আমাদের ধন্যবাদ দেওয়ার কথা।”
সাংবাদিকদের ‘সঠিক’ সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করে তিনি বলেন, “আমাদের যে ভুল হয় না তা না। আমাদের যেটা ভুল হয় সেটা আপনারা ধরিয়ে দেন। আমরা যদি চুরি-চামারি কিছু করি তাহলে আমাদের বলে দেন- আপনি এই এই জিনিসটা খারাপ করেছেন, পয়সা মারতেছেন। বলে দেন…
“কিন্তু আমার একটা অনুরোধ মিথ্যা সংবাদ দেবেন না। যেটা ঘটে নাই সেটা বলবেন না। সেটাতে পাশ্ববর্তী দেশ সুবিধা পেয়ে যাবে। আমাদের দেশের মিডিয়ার যে সুনাম আছে সেটা তাদের নেই। তারা মিথ্যা প্রচার করে সবচেয়ে বেশি।”
এসব সংবাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের পাল্টা উত্তর দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা ইচ্ছা করলে কাউন্টার করতে পারেন। আমি বললে লোকে বিশ্বাস করবে না। যতটা আপনি বললে বিশ্বাস করবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব আপনারা এটা কাউন্টার করেন।”
সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা একটি জাহাজের মালামাল নিয়ে নানা আলোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “এটা যারা রটাচ্ছে তারা আমাদের দেশের শত্রু। এ জাহাজটা মিডলইস্ট থেকে আসছে। মিডলইস্ট থেকে একটা দেশে গেছে সেখান থেকে আমাদের এখানে আসছে।”
“কোনো দেশের জাহাজ আসা কি আমাদের এখানে নিষেধ আছে? সবার জন্যতো আমাদের বন্দর উন্মুক্ত। আমরা কারো কাছে বন্দি নাকি? আমি শুধু তারে সেবা করব। আমার দেশ ওপেন, সবার জন্য খোলা। আপনারা জানেন এটার ভেতর অনেক কিছু আসছে- খেঁজুর, পেঁয়াজ এটা আমাদের জন্য দরকার। এগুলো কি আমি আসতে দিব না?”
পুলিশের মনোবল আগের চেয়েও বেড়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বলেন, “গ্রাফ যদি ওপরের দিকে যায় সেটা ভালো, যদি থেমে যায় বা নিচের দিকে আসে সেটা খারাপ। গ্রাফতো আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠেছে।
“আপনাদের কেউ যখন আত্মীয়স্বজন হারান তখন মনোবল কি দুই দিনে চেঞ্জ হয়? একটু সময় লাগে, আস্তে আস্তে আমরা সেটা ভুলে যাই। সেটার জন্যতো আপনাদের সময় দিতে হবে। …. আমার কাছেতো এরকম কিছু নাই যে আমি বলব হয়ে যাক। এটাতো জাদুর মত না। আমাদেরতো সময় দিতে হবে।”
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহীদুর রহমান, চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, টাস্কফোর্স-৪ এর কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শরীফ মনি, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নূর উল্লাহ নূরী, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগর পুলিশ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।