Published : 02 Jun 2025, 04:47 PM
পণ্য বিক্রির কমিশনে ভ্যাট বাড়ায় নতুন অর্ছবছরে অনলাইন কেনাকাটায় খরচ বেড়ে যেতে পারে।
২০২৫-২৬ প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে পণ্য বিক্রি কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে এ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের অন্যতম শীর্ষ অনলাইন বেচাকেনার প্ল্যাটফরম দারাজ বাংলাদেশের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলছেন, “নতুন ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাবের ফলে ই-কমার্স ব্যবসায় খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে, যা উদ্যোক্তা ও ভোক্তা উভয়ের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
“আগে অনলাইন বিক্রেতারা কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতেন। ১০ শতাংশ বেড়ে গেলে অতিরিক্ত খরচটা হয় বিক্রেতাকে বহন করতে হবে, নয়তো তা পণ্যের দামে বাড়তি খরচ হিসেবে ভোক্তার ওপর পড়বে। এর ফলে ই-কমার্স ব্যবসার ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়বে।”
রুশো বলছেন, “দারাজের ৯৫ শতাংশ বিক্রেতাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই), যাদের ওপর এই অতিরিক্ত খরচ বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
“এই ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দিকে আমাদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করবে।”
প্রায় এক দশক অনলাইনে ব্যবসা করছেন এমন একজন ব্যবসায়ী বলছেন, “ফেসবুক কেন্দ্রীক লাখ লাখ বিক্রেতা আছেন। তাদের কাছ থেকে এখন যে পাঁচ শতাংশ ভ্যাট আছে, সেটাই তো সরকার আদায় করতে পারে না।
“সরকারের সেই মেকানিজমই নাই। এখন আবার সেটা ১৫ শতাংশ করছে। যেটা হয় ট্যাক্সের লোকজন এসে ধরে ধরে বড় পেনাল্টি করতে পারে। কিন্তু এখন অনলাইনে খুচরা বিক্রেতা রীতিমতো লাখ লাখ। তাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করবে কী করে।”
সোমবার অর্থ উপেদষ্টো সালেহউদ্দিন আহেমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন।
এদিন বিকাল ৩টায় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে এ বাজেট উপস্থাপন করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও তা প্রচার হয়।
এর আগে সকালে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় অনুমোদন পায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হল ভিন্ন আঙ্গিকে।
এই বাজেট প্রস্তাব পাস হবে ৩০ জুন; ১ জুলাই শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
সবশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয় ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এবার তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে নিজের প্রথম বাজেট দিলেন।