Published : 22 Jan 2024, 01:20 AM
একসময় ব্যস্ত এক শহরে, অলিভিয়া নামে একটি মেয়ে বসবাস করতো। অলিভিয়া খুব একটা ধনী ছিল না। তবে অত্যন্ত গুণী, ভাল, দয়ালু এবং দেখতে বেশ সুশ্রী ছিল।
কিন্তু তারপরও সে বেশিরভাগ সময় উপেক্ষার শিকার হতো শুধু একজন মেয়ে ছিল বলে, অর্থাৎ লিঙ্গবৈষম্যের কারণে। তার দরিদ্র পরিবার যে শহরে থাকত, তারা ভাবত যে মেয়েরা কেবল পরিবারের কাজ করবে এবং তাদের কোনও মূল্য নেই।
অলিভিয়াকে স্কুলে পাঠানো হয়নি, পরিবর্তে অল্প বয়সে বিভিন্ন কাজ করে উপার্জন করার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু তারপরও অলিভিয়া ছিল প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী এবং সে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতো। তার বিভিন্ন পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন কিছু করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।
একবার ঘরে কাজ করতে করতে হঠাৎ টেলিভিশনে দেখলো মহাকাশ সম্পর্কে একটি ডকুমেন্টারি চলছে। কেউ সেখানে ছিলেন না, এবং সুযোগ পেয়ে অলিভিয়া টেলিভিশনে পুরো ডকুমেন্টারিটি দেখে ফেলল। ডকুমেন্টারিটিতে কীভাবে একজন মানুষ মহাকাশচারী হয়ে উঠতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বোঝানো হচ্ছিল। অলিভিয়া ভাবলো এমন একটি সুযোগ যদি সে পেতো!
সে ডকুমেন্টারিতে দেখানো প্রসেস অনুযায়ী সেখানে আবেদন করে বসল। এক সময় ওখান থেকে তার ডাক এলো। কঠোর অনুশীলন অধ্যবসায় এবং অধ্যয়নের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজেকে প্রস্তুত করে তুলেছিল। অবশেষে, সে প্রস্তুত হল। হলওয়ে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নার্ভাস, তবুও ভিন্ন রকম এক আনন্দ অনুভব হচ্ছিল অলিভিয়ার।
তারপরও অলিভিয়ার এই পুরো বিষয়টিকেই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না, সে মাথা নিচু করে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে একটি শিলাখণ্ড তুলে ধরল, অন্য হাতে এক মুষ্টি বালি।
পরীক্ষার এক সপ্তাহ পর ফলাফল প্রকাশ হলো! আজ ছিল ফলাফল প্রকাশের দিন। অলিভিয়া, হলওয়েতে নোটিশ বোর্ডে মনে সংশয় কিন্তু আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজের নামটি খুঁজছিল। একসময় সে চোখ বড় বড় করে নোটিশ বোর্ডের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়ে। চূড়ান্ত নির্বাচিতদের মাঝে তার নামটি রয়েছে! সে আনুষ্ঠানিকভাবে একজন মহাকাশচারী হয়ে উঠবে! নাসার পরবর্তী যাত্রায় সে চাঁদে যাবে! এ যেন আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন আজ সত্যি হতে চলেছে!
অলিভিয়া সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিতে দিতে গর্বের সঙ্গে তার নতুন স্পেসসুটটি দেখলো। মনে হচ্ছিল এটা যেন তার স্বপ্নের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া। কিছুদিন পর, একটি বিশেষ মুহূর্ত! অলিভিয়ার হাসিমুখে তার স্বপ্নের নভোযানের দরজা খুলে তার নতুন বন্ধু অ্যান্ড্রুসহ বিস্ময় এবং গর্বিত পদক্ষেপে চাঁদের পাথর এবং বালিতে পা রাখল।
তারপরও অলিভিয়ার এই পুরো বিষয়টিকেই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না, সে মাথা নিচু করে চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে একটি শিলাখণ্ড তুলে ধরল, অন্য হাতে এক মুষ্টি বালি। অবাক বিস্ময়ে, কৌতূহল নিয়ে চারদিকে তাকালো অলিভিয়া। পেছন থেকে তার কাঁধে অ্যান্ড্রু একটি হাত রাখতেই সে যেন বাস্তবে ফিরে এলো। ‘এটা তোমার প্রাপ্য’ অ্যান্ড্রু উষ্ণভাবে হেসে বলল। সফলভাবে চাঁদে বিচরণের পর তারা পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল।
অ্যান্ড্রু এবং অলিভিয়া একসাথে কাটানো চার মাসের বেশি সময়ে তাদের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল। অলিভিয়া অ্যান্ডারসন বিশ্বকে প্রমাণ করেছিল যে একজন নারী এবং পুরুষের মধ্যে মেধা এবং যোগ্যতায় তেমন পার্থক্য নেই। একজন সফল নভোচারী সেলিব্রেটি হিসেবে অলিভিয়ার বাকি জীবন বেশ সুখ এবং স্বচ্ছলতায় কেটেছিল।