Published : 24 Aug 2023, 03:51 PM
এক শহরের মস্ত এক বাংলোতে থাকতো এক মেয়ে। মেয়েটা খাটো ছিল, তাই স্কুলে সবাই তাকে খেপাতো।
তার কোনো বন্ধু ছিল না। ঘরে ছিল এক বিড়াল, তার সঙ্গেই সময় কাটাতো। মেয়েটির নাম প্রভা। প্রভা স্কুলে যেত এবং মন দিয়ে পড়তো। সে পড়ালেখায় খুব ভালো ছিল।
তার স্কুলের শিক্ষকরা তাকে খুব আদর করত। এই দেখে স্কুলের ছেলেমেয়েরা তাকে আরো খেপাতে লাগল। কিন্তু এসব প্রভার গায়েই লাগে না! এই দেখে স্কুলের ছেলেমেয়েরা তাকে আর জ্বালাতো না। যাকে জ্বালাচ্ছি সে যদি না-ই খেপে বা বিরক্ত না হয় তাহলে কী আর মজা হয়?
প্রভার বাবা ছিল না, মা থাকতো দেশের বাইরে। ঘরে শুধু ছিল সে আর তার দাদা এবং তার প্রিয় পোষা বিড়াল। প্রভার মায়ের কথা খুব মনে পড়ত। বছরে একবার দেশে আসতো। এক মাস থেকে চলে যেতো।
একদিন প্রভা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের চুল আঁচড়াচ্ছিল। হঠাৎ সে খেয়াল করলো তার হাত পা যে নড়ছিল তা আয়নায় ভিন্নরকম দেখাচ্ছিল। কী যেন একটু আলাদা মনে হচ্ছিল। সে ঢুকে গেলো। মিরর ওয়ার্ল্ড! সে কমিকসে পড়েছিল এ ব্যাপারে।
প্রভা তাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার নাম কী? মেয়েটি উত্তরে বলল, আমার নাম ভাপ্র।
এটা কি সত্যি হতে পারে! তা কখনো প্রভার মাথায় আসেনি। সে হাঁটতে হাঁটতে দেখলো সবকিছু তার বাসার আশপাশের এলাকার সঙ্গে মিলে যায়। কিন্তু মানুষের পোশাক-আশাক আলাদা। ছেলেরা স্কার্ট পরছে আর মেয়েরা পরছে শার্ট। মেয়েরা যায় অফিসে, ছেলেরা থাকে বাসায়।
প্রভা তারই মতো একটা মেয়েকে দেখতে পেলো। কিন্তু তার জামাটা কিছুটা আলাদা। প্রভা তাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার নাম কী? মেয়েটি উত্তরে বলল, আমার নাম ভাপ্র।
তারপর প্রভা-ভাপ্র দুজন বন্ধুত্ব করে নিল। ভাপ্র প্রভাকে তার বাসায় নিয়ে যেতে চাইল। প্রভা রাজি হয়ে গেলো। আমার মা বিদেশে থাকে। সে কি আবার এই ওয়ার্ল্ডে বাসায় থাকবে? এই ভেবে প্রভা খুবই খুশি হলো। তারপর পৌঁছে দেখে আসলেই তো! সে মিরর ওয়ার্ল্ডের মায়ের সঙ্গে কথাবার্তা বললো।
তারা অনেক মজার মজার বিস্কুট খেলো। তারপর প্রভা খেয়াল করলো সময় চলে যাচ্ছে। সে বিদায় নিয়ে আবার ভাপ্রর বাসার আয়নার মাধ্যমে নিজের বাসায় ফিরলো। এখন থেকে সে সবসময় সেখানে যায়।
এ সম্পর্কে কেউ জানে না। শুধু তার প্রিয় পোষা বিড়াল ছাড়া।