Published : 28 Aug 2024, 10:12 PM
রাজশাহীতে সংবাদমাধ্যমের দুই প্রকাশকসহ ১৪ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপি ও ছাত্রদলের দুই নেতা।
এর মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বজলুর রহমান মন্টু বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় দুটি মামলা করেন বলে ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান।
এক মামলায় লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চার সাংবাদিকের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্য মামলায় মহানগর বিএনপির অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ এনে স্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যমের প্রকাশকসহ চার সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে।
চাঁদা দাবির মামলায় এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব ও জিটিভির রাজশাহী প্রতিনিধি রাশেদ রিপন, দৈনিক করতোয়ার রাজশাহী প্রতিনিধি রোজিনা সুলতানা ও স্থানীয় দৈনিক উপচার পত্রিকার প্রতিবেদক আসগর আলী সাগর।
দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের মামলার আসামিরা হলেন, পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম পত্রিকার প্রকাশক ও আজিজুল আলম বেন্টু, স্থানীয় দৈনিক সানশাইন পত্রিকার প্রকাশক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইউনুস আলী, দৈনিক উপচার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক নুরে ইসলাম মিলন ও নিজস্ব প্রতিবেদক সবুজ আলী।
এ মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি ফজলে হোসেন বাদশাসহ ২৩১ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৬৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চাঁদা দাবির মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হয়। এটি বিএনপির নিজস্ব সমাবেশ হওয়ায়, সব ক্ষেত্রে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করা হয়।
সমাবেশকে সফল করতে সাংবাদিকদের জন্য ‘মিডিয়া কার্ড’ ইস্যু করা হয়। অধিকাংশ সাংবাদিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই কার্ড গ্রহণ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, সমাবেশের আগের দিন দুপুরে নগর বিএনপির কার্যালয় থেকে এই কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু বাদী বজলুর রহমান মন্টু উল্লিখিত সাংবাদিকদের কার্ড দিলে তারা গ্রহণ না করে তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা তাকে হত্যার হুমকি দেন।
থানার এসআই তাজউদ্দিন আহমেদকে মামলাটি তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি মাসুদ পারভেজ।
একই বাদীর ভাঙচুরের মামলার এজাহারে গত ১৯ জুলাই মহানগর বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও বোমাবাজির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে, মুদির দোকানে হামলার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার রাজশাহীর বাঘা থানায় করা মামলায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে।
থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, উপজেলার কিশোরপুর গ্রামের ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসান মামলাটি করেন।
মামলায় ১৪১ জনের নাম উল্লেখ এছাড়াও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এজাহারনামীয় ১৪ নম্বর আসামি হিসেবে আছেন বাঘা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং ইত্তেফাক ও দৈনিক সানশাইনের উপজেলা প্রতিনিধি মো. নুরুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৫ অগাস্ট আসামিরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বাদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। পরে সেখানে হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
তবে মামলার আসামি সাংবাদিক নুরুজ্জামানের দাবি, প্রকাশিত সংবাদের জেরে তার ওপর কেউ বিরাগভাজন হয়ে থাকতে পারেন। এ জন্য তাকে রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: