Published : 09 Feb 2025, 05:14 PM
ফেনীর দাগনভূঞায় পূর্ব বিরোধের জেরে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার পাঁচদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয় বলে দাগনভূঞা থানার অন্তর্গত কোরাইশমুন্সী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নাজমুল হাসান তানিম জানান।
মৃত ২২ বছর বয়সী মোবারক আলী ওরফে সজল ওরফে বাবু দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়নারায়নপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকায় চারজন মিলে মোবারককে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে মোবারককে অটোরিকশায় তুলে চিকিৎসকের কাছে পাঠিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় মোবারকের মা জোছনা বেগম বাদি হয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দাগনভূঞা থানায় মামলা করেন। মামলার এজহারভুক্ত প্রধান আসামি এনামুল হককে (৪০) শনিবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এসআই নাজমুল জানান।
এনামুল দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মধ্যম জয়নারায়নপুর গ্রামের তমিজ উদ্দিন বেপারী বাড়ির আজাহার আলীর ছেলে। স্থানীয়ভাবে তিনি মাদক কারবারী হিসেবে পরিচিত।
মামলার বরাতে এসআই নাজমুল বলেন, “মোবারক আলী গত ৩ ফেব্রুয়ারি দোকানের কাজ শেষে রাতে বাড়ি ফিরে যান। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে রিয়াদ ও সাগর নামের দুই যুবক তাকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ওইসময়ে তাদের সঙ্গে মোবারকের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে রিয়াদ ও সাগরের সঙ্গে এসে যোগ দেয় তাদের পূর্বপরিচিত এনামুল হক ও আবদুল হামিদ। এ সময় চারজন মিলে মোবারককে বেধড়ক পেটাতে থাকে।
“মোবারক তাদের হাত থেকে ছুটে পাশের একটি দিঘীর পাড়ে আশ্রয় নিলে এনামুল সেখানে গিয়ে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে চারজনে মিলে মোবারককে একটি অটোরিকশায় তুলে স্থানীয় বাহার ডাক্তারের কাছে পাঠিয়ে পালিয়ে যায়। পরে মোবারককে স্থানীয়রা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।”
মোবারক আলীর ভগ্নিপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, “চট্টগ্রাম মেডিকেল নেওয়ার পর মোবারকের মাথায় অপারেশন করা হয়। পাঁচদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।”
এসআই নাজমুল বলেন, “আসামি এনামুলকে রোববার দুপুরে আদালতে তুলে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।”