Published : 23 Aug 2024, 08:30 PM
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে ভারি বৃষ্টি এবং প্রবল স্রোতের কারণে একটি লোহার সেতু ভেঙে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়নের দক্ষিণ চরআলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খালের পানিতে ভেঙে পড়ে আছে লোহার সেতুটি। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সড়কের দুপাশে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, টানা বর্ষণে গত বুধবার ভোরে সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ভেঙে পড়ে। এতে উচাখিলার উজানচর, মরিচারচর, চরআলগী, টানপাড়া, টান মলামারি, মাইজপাড়া ও হাশের আলগীসহ অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এ ছাড়া ঈশ্বরগঞ্জ, উচাখিলা, রাজিবপুর এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় হয়ে ত্রিশাল, কালীবাজার ও ময়মনসিংহে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে।
চর আলগী গ্রামের ৪৪ বছর বয়সী মো. স্বপন মিয়া বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে দৈনিক ১০ হাজারের বেশি মানুষ এবং ৪০০-৫০০ মানুষ অটোরিকশায় চলাচল করে। আমরা উচাখিলা ও ঈশ্বরগঞ্জ বাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। তাই সেতুটি ভেঙে পড়ায় আমার খুব খারাপ অবস্থায় আছি।
“আশপাশের ১৫ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার লোক এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরকারের কাছে দাবি, আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সেতু যেন দ্রুত মেরামত করে দেয়।”
৬০ বছর বয়সী স্থানীয় ফজলুল হক নামের একজন বলেন, “প্রবল স্রোতে সেতুর নিচে দুপাশ থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। সেতুটি দীর্ঘদিনের পুরোনো। সেতু ভেঙে পড়ায় ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী চরম বিপাকে পড়েছেন।”
মাথায় পাট নিয়ে বিক্রির জন্য বাজারে যেতে চেয়েছিলেন মরিচার গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন। বিক্রি করে সংসারের জন্য করবেন বাজার-সদাই। ভেঙে পড়া কালভার্টের সামনে এসে থেমে যান। ভারিকন্ঠে বলেন, “পাট বিক্রি করতে না পারলে খাব কি? বাজারে কীভাবে যাব?”
উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি সদস্য) আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম বলেন, “খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। যতদিন না সেতুটি মেরামত হচ্ছে, ততদিন ভোগান্তি কমবে না।”
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, “দুর্ভোগ নিরসনে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করার জন্য প্রয়েজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেহেতু কালভার্টি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধীনে, তাই তাদের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ীভাবে মেরামতের পদক্ষেপ নেবেন তারা।
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভেঙে যাওয়া সেতুটি পরিদর্শন করে তা মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন পাঠানো হয়েছে।
যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি মেরামত করে সাধারণ মানুষের চলাচল উপযোগী করার আশ্বাসও দেন তিনি।