Published : 16 Sep 2024, 12:27 AM
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নারীদের হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবকের বিরুদ্ধে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আখতার জাবেদের আদালত-৪ আবেদনটি আমলে নিয়ে বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেছে বলে রোববার রাতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সদর থানার এসআই নুর মোহাম্মদ জানান।
তিনি বলেন, সমুদ্রসৈকতে নারীদের হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন নিজ এলাকা থেকে মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে শনিবার বিকালে ভুক্তভোগী একজন বাদী হয়ে ফারুকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গ্রেপ্তার মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২২) চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়া ইউনিয়নের চুনতি এলাকার বাসিন্দা।
এসআই নুর মোহাম্মদ বলেন, বিচারক রিমান্ডের আবেদনটি আমলে নিয়ে বুধবার শুনানির দিন ধার্য আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে আযম খান নামে এক ব্যক্তি তার ফেইসবুকে তিনটি ভিডিও শেয়ার করেন।
ক্যাপশনে তিনি লিখেন, “কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে শরিয়া পুলিশিং চালাচ্ছে স্থানীয় সমন্বয়কেরা। কোনো নারীকে একা পেলে, কারো পোশাক পছন্দ না হলে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের আক্রমণ করছে। কক্সবাজার এখন আফগানিস্তান।”
এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
কক্সবাজারে 'মারধর ও নির্যাতনকারী' সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা
ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কিটকটে একা বসে থাকা ‘এক তরুণীকে’ লাঠি হাতে ঘিরে ধরেছেন চার যুবক। তারা প্রথমে ‘ওই তরুণীর’ পরিচয় এবং কেন রাতে একা সৈকতে অবস্থান করছেন জানতে চান। ‘তরুণীটি’ ঘুরতে আসার কথা জানালে তারা সন্তুষ্ট হননি।
এক পর্যায়ে যুবকরা সৈকতের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে ওই ‘তরুণীকে’ সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।
দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, আরেক ‘তরুণীকে’ ঘিরে রয়েছে কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে লাঠি হাতে আছেন কয়েকজন যুবক।
ওই যুবকদের মধ্যে একজন লাঠি দেখিয়ে ওই ‘তরুণীকে’ নির্দেশ দিচ্ছিলেন কান ধরে উঠবস করতে। পরে ভয়ার্ত ওই ‘তরুণী’ উঠবস করতে থাকলে ঘিরে থাকা লোকজনকে অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা গেছে ভিডিওতে।
আরেকটি ভিডিওতে সৈকতের ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্সে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ভুক্তভোগী এক ‘তরুণী’সহ আরও একজনকে দেখা যায়।
সেখানে সাধারণ পোশাকের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে এক ‘তরুণী’ কান্নারত অবস্থায় অভিযোগ করতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পর সেখানে প্রবেশ করেন লাঠি হাতে ‘তরুণীকে’ উঠবস কজরানো সেই যুবক।
এসময় ওই‘ তরুণী’ যুবকে দেখিয়ে বলছিলেন, “উনি আমার ফোন কেড়ে নিয়েছেন। দয়া করে ফোনটি ফেরত দিন। প্রয়োজনে মোবাইলে থাকা সবকিছু ডিলিট করে দেব।”
এসব ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। ভিডিও দেখে ফারুকুলকে শনাক্ত করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।