Published : 05 Jun 2025, 07:19 PM
মেহেরপুরে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও পছন্দের পশু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতা। এবার জেলায় ৩০০ কোটি টাকার কোরবানির পশু বিক্রির আশা প্রাণিসম্পদ বিভাগের।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার সর্ববৃহৎ বামন্দী-নিশিপুর পশুহাটে ছোট, বড় ও মাঝারি আকৃতির সব গরুর পসরা বসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার দরদামে মুখরিত এই হাট। সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে লালনপালন করায় এই এলাকার গরুর চাহিদা দেশের সর্বত্র।
রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরু ব্যবসায়ীরা বেচাকেনার জন্য এই হাটে ভিড় করছেন। স্থানীয় খামারিদের পাশাপাশি বাইরের জেলার বেপারীরাও এখানে পশু বিক্রি করছেন। আর ক্রেতাও যাচাই-বাছাইয়ের পর পছন্দের পশু কিনতে পেয়ে খুশি।
মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ব্যার্নাজী বলেন, পালন পদ্ধতির কারণে এ জেলার গরু মাংস খুবই সুস্বাদু। তাই এই গরুর চাহিদা দেশজুড়ে। এবার কোরবানির ঈদে ছোটবড় এক হাজার ৬০০ খামারে গরু প্রস্তুত করা হয়েছে; যা থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বিক্রির লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলার অন্যতম গাংনী উপজেলার বামন্দী-নিশিপুর গরু হাট। সপ্তাহে শুক্রবার, সোমবার ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিনই এই হাট খোলা থাকে। শুধুমাত্র এই হাট থেকেই ১০০ কোটি টাকার গরু বিক্রির আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলায় ছোটবড় প্রায় ১৪টি গরুর হাট রয়েছে।
বুধবার সরেজমিনে বামন্দী-নিশিপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের আশপাশের সড়কে গরুবাহী ট্রাকের সারি। বেপারীদের হাঁকডাক এবং ক্রেতার দরদাম ও ব্যস্ত আলোচনায় গরুর হাট পরিণত হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশে।
বিক্রেতা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মাঝারি আকৃতির গরুর প্রতি ক্রেতার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কারণ দলগত এবং একক কোরবানির জন্য এগুলো অধিক উপযোগী।
আরেক বিক্রেতা বেলাল বলেন, এবার ভারত থেকে গরু আসেনি। তাই ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। তবে হাটে লাল গরুর চাহিদা বেশি।
আশেপাশের ১০টি জেলার মধ্যে বামন্দী-নিশিপুরের গরুর হাট সবচেয়ে বড় বলে জানান ক্রেতা আফজাল হক। তিনি বলেন, “পাবনা থেকে গরু কিনতে এসেছি। আজকে ১০ থেকে ১৫টি গরু কিনে নিয়ে যাব।
“মেহেরপুরের গরু কিনে লাভবান হই। তাই প্রতি হাটেই এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে যাই। কারণ এখানকার গরুর মাংসের খ্যাতি আছে। চামড়ার মানও ভাল।”
বামন্দী পশুর হাটের ইজারাদার লোকমান আকন্দ বলেন, এবার গরুর দাম ও বিক্রি দুটোই ভালো। হাটে পর্যাপ্ত গরু উঠেছে। প্রতিদিন কোটি টাকার বেশি বেচাকেনা হয়। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।
তবে হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থায় হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মেহেরপুরে ২৬ হাজার ৪৭টি খামারে মোট এক লাখ ৭১ হাজার ৭৫৩টি কোরবানি উপযোগী গরু ও ৭৬২টি মহিষ প্রস্তুত রয়েছে।
এ বছর জেলায় ৯০ হাজারের বেশি পশু কোরবানি দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বাকি পশু অন্য জেলায় বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।