Published : 30 Aug 2024, 04:47 PM
চাঁদপুরে বানের পানিতে কয়েকটি উপজেলার পোল্ট্রি খামার তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভেসে গেছে পুকুর-দিঘির মাছ।
গত কয়েকদিনে শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, সদর ও হাইমচর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে- বসতবাড়ির সঙ্গে খড়ের গাদা, গোয়ালঘর ও পোল্ট্রি খামারগুলো পানির নিচে তলিয়ে আছে।
তবে বন্য শুরুর পর এখন পর্যন্ত এসব এলাকার কতজন খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানাতে পারেনি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
শাহরাস্তি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল শামীম বলেছেন, বানের পানিতে তার উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ১৫টি পোল্ট্রি খামার তলিয়ে গেছে।
এ উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর, সূচিপাড়া দক্ষিণ, চিতোষী ইউনিয়নের বহু গ্রাম কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালী জেলার বানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
এসব এলাকার বন্যা কবলিত লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিলেও গবাদি পশু নিয়ে অনেকে পড়েছেন বিপাকে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শামীম বলেন, “ব্যক্তি কেন্দ্রিক পালন করা ২০০-২৫০টি গবাদি পশু আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। তবে পশু খাবারের সংকট রয়েছে। আমরা সংকট কাটানোর চেষ্টা করছি।
“তবে গবাদি পশুর বড় ধরনের কোনো খামার এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। শাহরাস্তি উপজেলায় প্রায় ১০টি খামার আছে। আমাদের মাঠকর্মীরা কাজ করছে। কিছুদিন পরে খামারিদের তালিকা ও ক্ষতি নির্ণয় করা হবে।”
চাঁদপুর সদরের বাগাদী, বালিয়া ও চান্দ্রা ইউনিয়নে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। অধিকাংশ খড়ের গাদা ও পোল্ট্রি খামার পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা এলাকার খামারি রহমান বলেন, “পানি আসার কারণে ছোট সাইজের মুরগি বিক্রি করে দিয়েছি। পানি কমলে বোঝা যাবে খামারে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।”
একই ইউনিয়নের গাইনগো দীঘি এলাকার খামারি মনির হোসেন বলছিলেন, “খামার তলিয়ে যাওয়ার কারণে আপাতত মুরগি লালন পালন বন্ধ। আমাদের এলাকার আরও কয়েকজনের খামারের একই অবস্থা। গত এক সপ্তাহে পানি কমছে না।”
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন বলেন, তারা এখনও ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ট্রি ফার্মের তালিকা তৈরি করেননি। তবে ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করতে মাঠ পর্যায়ে তাদের কর্মীরা কাজ করছেন।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মণ্ডল জানান, অতিবৃষ্টিতে যেসব লোকজন পানিবন্দি অবস্থায় ছিলেন, সেখান থেকে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতায় ফরিদগঞ্জে ১ হাজার ২৫০টি পুকুর-দিঘির মাছ ভেসে গেছে। এখানে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মাছ চাষি আছেন। এর মধ্যে সাড়ে সাত হাজার চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গবাদি পশুর খামারের ক্ষয়ক্ষতি এখনও হিসাব করা হয়নি।”
চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, জেলার শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ ও সদর উপজেলায় বানের পানি ও অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জেলায় খামারিদের তথ্য এখন পর্যন্ত আসেনি। উপজেলা থেকে তথ্য এলে তখন পরিসংখ্যান বলা যাবে।