Published : 07 Jan 2025, 02:12 PM
ফরিদপুর সদরে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাস খাদে পড়ে অন্তত পাঁচজনের প্রাণহানি হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের রাজবাড়ী-ভাঙ্গা রেল সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল।
নিহতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের ভুইয়াপাড়ার সায়েম (৪০), সাদিয়া জহির (৪৫), রানা শরিফ ভূঁইয়া (৬৭) এবং রাইয়ান (১১)। আরেকজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুরে ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় গেরদা থেকে মুন্সিবাজারের দিকে যাওয়া একটি হায়েস মাইক্রোবাস রেললাইনে উঠে পড়ে।
এ সময় মধুমতি এক্সপ্রেসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়। ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে বেশ কিছুদূর গিয়ে রেললাইনের পাশের পুকুরে পড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম বলেন, খবর পেয়ে হতাহতদের উদ্ধারে ফরিদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করে ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে আরও দুজন মারা যান বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দু’জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তারা দুজন নারী। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালকও রয়েছেন।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে তবে তার ভিতরে কিংবা তার নিচে চাপা পড়া অবস্থায় আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নারায়ণগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে বেড়াতে এসেছিলেন। ওই মাইক্রোবাসে চালকসহ মোট নয়জন ছিল বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গেরদা থেকে একটি সড়ক রেলপথ অতিক্রম করে মুন্সিবাজার এলাকায় মিলেছে। ওই সড়কে একটি রেল ক্রসিং আছে। তবে, দীর্ঘদিন যাবত এই সেখানো কোনো লাইনম্যান না থাকায় মাঝেমধ্যে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। আগেও প্রাণহানি হয়েছে।
কিন্তু ফরিদপুর রেল স্টেশনের মাস্টার তাকদির হোসেন বলেন, গেরদায় রেল বিভাগের অনুমোদিত কোনো ক্রসিং নেই।
তবে দুর্ঘটনার খবর শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা।
তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি নিহতদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের লাশ বাড়িতে নেওয়া এবং দাফন-কাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা করব।”