Published : 06 Oct 2023, 02:53 PM
টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোণার প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন স্থানে আমনের জমি তলিয়ে গেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান জানান, শুক্রবার বেলা ১২টায় উব্ধাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে ধনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১.৮০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া অন্য নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। সোমেশ্বরী নদী বিজয়পুরে পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫.২২ সেমি ও দুর্গাপুরে ২.৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জারিয়া স্টেশন এলাকায় কংস নদীর পানি বিপৎসীমার ২.৩৮ সেন্টিমিটার নীচে আছে বলে জানান এই প্রকৌশলী।
তবে এরই মাঝে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান।
তিনি জানান, নিচু এলাকার প্রায় ১১ হাজার ৪৮২ হেক্টর জমির আবাদি আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধানের জমি তলিয়েছে।
তলিয়ে যাওয়া জমির মধ্যে সদরে ২ হাজার ৪৭০ হেক্টর, পূর্বধলায় ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর, দুর্গাপুরে ৪৫ হেক্টর, কলমাকান্দায় ১৮০ হেক্টর, মোহনগঞ্জে ১ হাজার ২০০ হেক্টর, বারহাট্রায় ২১৫ হেক্টর, আটপাড়ায় ১ হাজার হেক্টর, মদনে ৫০০ হেক্টর, খালিয়াজুরীতে ১২ হেক্টর ও কেন্দুয়ায় ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রয়েছে।
কলমাকান্দা উপজেলার কনুরা গ্রামের কৃষক মনতোষ বিশ্বশর্মা জানান, তিনি এ বছর ৩০ কাঠা জমিতে আমন আবাদ করেছেন। এর মধ্যে তিন দিনের বৃষ্টিতে তার ছয় কাঠা জমি তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, “হাতে টাকা ছিল না। কিছু টাকা ধার করে এনে জমি লাগাইছিলাম। কপালডাই খারাপ। বৃষ্টির পানিতে জমি তলায়া গেছে। এখনও বৃষ্টি অইতাছে। এই ক্ষেতগুলোর ধান বাচাবো বইল্যা কোন আশাই নাই।”
কেন্দুয়া উপজেলার দুল্লী গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, “বাড়ির সামনের হাওরে লাগানো প্রায় ২০ কাঠা ক্ষেত তলায়া গেছে। এইডির আর আশা নাই।”
তবে জেলার সর্বোচ্চ কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান কৃষকদের এখনই হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, “দ্রুত পানি নেমে গেলে আমন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।”