Published : 10 Jan 2024, 09:41 AM
বরিশালের শহীদ অ্যাডভোকেট আব্দুর রব সেরনিয়াবাত আইন মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মোস্তফা জামাল খোকন এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসাইন।
আনোয়ার হোসাইন জানান, বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্র সংসদের অস্থায়ী ছাত্র কর্মপরিষদের ম্যাগাজিন সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আরিফুর রহমান অপু ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান আজিম তাদের উপর এ হামলা চালিয়েছেন।
এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে টাঙানো আব্দুর বর সেরনিয়াবাত, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ছবি ভাঙচুরের চেষ্টা এবং ঘটনার দৃশ্য ধারণ করায় হামলাকারীরা দুই ছাত্রকে মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
হামলার শিকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মোস্তফা জামাল খোকন জানান, অনেকদিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার কলেজ খুলেছে। সন্ধ্যার দিকে তিনি নিজ কক্ষে মহাবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন।
“হঠাৎ অপু ও আজিম এসে কক্ষে প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে টাঙানো ছবি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। তখন বাধা দিলে হামলাকারীরা বলেন ‘ল কলেজে সাদেকের কোনো লোক থাকতে পারবে না। কলেজ আমরা চালাব’।
“তখন হামলাকারীরা আনোয়ার হোসেনকে কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে কক্ষ থেকে বের করে মারধর ও লাঞ্ছিত করে।”
এ সময় আনোয়ার হোসেনকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে অপু তার গায়েও হাত তুলেছে বলে অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার দৃশ্য দুই ছাত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করছিল। হামলাকারীরা তাদের মেরে মোবাইল দুইটি ছিনিয়ে নিয়েছে। ”
হামলার শিকার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা কক্ষে বসা ছিলাম। তারা এসে ছবি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। কিন্তু ছবি উপরে থাকায় ভাঙচুর করতে পারেনি।
“তারা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে ‘রাজাকার’ বলে অভিহিত করে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করে জামা-প্যান্ট ছিড়ে ফেলেছে। এ সময় ছাত্ররা এসে আমাকে রক্ষা করে।”
খবর পেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর এবং সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহসহ দলের নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
সেখানে সাদিক আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, “বরিশাল শান্তির শহর ছিল। সেখানে অশান্তি মোটেও কাম্য নয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্বান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের এই সাবেক মেয়র।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুর রহমান অপু বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি (অপু) অডিট অফিসারের কাছে গিয়েছিলেন। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে।
বরিশাল মহানগরের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”