Published : 19 Oct 2024, 06:34 PM
বন্ধ রাখা রেলের মাসিক টিকেট, টাঙ্গাইল কমিউটার ও সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস পুনরায় চালু, জয়দেবপুর স্টেশনে সব ট্রেন থামানোসহ গাজীপুর-ঢাকা রেল যোগাযোগ উন্নয়নে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে একটি সংগঠন।
শনিবার গাজীপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানায় গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন নামের সংগঠনটি।
সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী মো. শামসুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, জয়দেবপুর-কমলাপুর ও মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে অন্তত এক লাখ কর্মজীবী প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। শিল্প-অধ্যুষিত ৭০ লাখ জনসংখ্যার প্রাণকেন্দ্র জয়দেবপুর স্টেশন থেকে প্রায় ২০ হাজার যাত্রী প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে থাকেন।
সড়ক পথের ভোগান্তির কারণে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি দিন দিন ট্রেনের ওপর চাপ বাড়ছে। অথচ অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে সময়-সাশ্রয়ী, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও সম্ভাবনাময় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় যাত্রীরা প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আগে শত চেষ্টার পরও কোনো বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে যাত্রীদের বিড়ম্বনা দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় ৩ সেপ্টেম্বর রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বিক সমস্যা নিয়ে ছাত্র ও যাত্রীদের প্রতিনিধি দলের একটি সভা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।
এরপর একাধিকবার সভা করেও রেল কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় গাজীপুরের সাধারণ ছাত্র-জনতা ও যাত্রীদের পক্ষ থেকে আগামী ২১ অক্টোবর জয়দেবপুর স্টেশনে সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন প্রকৌশলী শামসুল হক।
১০ দফা দাবিগুলো হলো-
১. গাজীপুর-ঢাকা বন্ধ রাখা মাসিক টিকেট ৪৫০ টাকা পুনরায় চালু করা।
২. তুরাগ ট্রেনে চারটি মহিলা কোচসহ ১৬টি কোচ যুক্ত করে গাজীপুর-ঢাকা একাধিকবার চালানো।
৩. টাঙ্গাইল কমিউটার ও সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় চালু করা এবং টঙ্গী ও তেজগাঁও স্টেশনে স্টপেজ দিয়ে একাধিকবার চলাচল করা।
৪. যাত্রী সংখ্যা ও রাজস্ব আয় বিবেচনা করে গাজীপুরে সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি নিশ্চিত করা এবং আসন সংখ্যা ২০০ থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার করা।
৫. ভাড়ায় চালিত সকল ট্রেনের ইজারা বাতিল করে রেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালনা করা।
৬. গাজীপুর থেকে আসনবিহীন টিকিটের মূল্য এয়ারপোর্ট ও কমলাপুর পর্যন্ত যথাক্রমে ২০ ও ৩০ টাকা নির্ধারণ, টিকিট প্রাপ্তি সহজ এবং যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা।
৭. যাত্রী চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ঈশা খাঁ, ভাওয়াল ও নোয়াখালী এক্সপ্রেস দুই থেকে তিনটি কোচ দিয়ে চালানো হচ্ছে। এমতাবস্থায় সকল ট্রেনে কমপক্ষে ১২টি বগি সংযুক্ত করা।
৮. ট্রেন ও প্ল্যাটফরম হকার ও ভিক্ষুকমুক্ত রাখা।
৯. ঢাকা-গাজীপুর রেল প্রকল্প দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা এবং জয়দেবপুর জংশন স্টেশনকে মানসম্মত ব্যবহার উপযোগী করা।
১০. জয়দেবপুর স্টেশন সংলগ্ন পশ্চিম দিকে বিকল্প বাইপাস সড়ক নির্মাণ ও বিআরটি টার্মিনালের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।
সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়া, সংগঠনের সহসভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, মো. শাহজাহান, মো. সিরাজউদ্দৌলা, এ কে এম টিটু, মো. মোশারফ হোসেন, মো. হাফিজুর রহমান, মো. কামাল পাটোয়ারী, গাজীপুর মহানগর ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা ফরহাদ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী সামিউল আলম নাবিল এবং ফারুক ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।