Published : 25 Jun 2023, 06:58 PM
রাজশাহীতে গরুর খামারের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাগলের খামারও। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহী জেলায় খামার ও বাড়িতে প্রায় সোয়া ৫ লাখ ছাগল লালন-পালন করা হয়েছে।
দেশীয় পদ্ধতিতে ব্ল্যাক বেঙ্গলসহ বিভিন্ন জাতের ছাগল লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয় খামারিরা। অনেকে বাড়িতেও একই পদ্ধতিতে ছাগল পালন করে আর্থিক স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন।
এমনই দুজন খামারি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণীপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের সোহেল রানা ও তার স্ত্রী রিমা খাতুন। স্নাতক পাস এ দম্পতি চাকরি না পেয়ে পাঁচ বছর আগে বাড়িতেই শুরু করেন ছাগল লালন-পালন।
ছয় থেকে সাত মাস লালন-পালন শেষে কোরবানির ঈদের আগে ছাগলগুলো বিক্রি করতেন তারা। আর এভাবেই হয়ে ওঠেন সাবলম্বী। এর ধারাবাহিকতায় দুই বছর আগে বাড়ির পাশে গড়ে তোলেন ছাগল মোটাতাজা করার খামার।
সোহেল রানা জানান, চলতি বছরে তার খামারে লালন-পালন করা হয়েছে ৩০টি ছাগল। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তিনি ৩০টি ছাগল ছানা কিনেছিলেন। প্রতিদিন এগুলোর পেছনে খাবার বাবদ খরচ হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
তিনি বলেন, “গত ২০ জুন খামার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় আটটি ছাগল বিক্রি করেছি। বাকি ২২টির দাম উঠেছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। আশা করছি চার লাখ টাকায় এই ছাগলগুলো বিক্রি হবে। সেটি যদি হয় তবে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
রিমা খাতুন বলেন, ছাগলের খাবারের তালিকায় থাকে দানাদার জাতীয় খাবার যেমন গমের ভুসি, ডালের ভুসি, চালের গুঁড়া, চালের খুদ, খইল ও ঘাস। এজন্য খামারের পাশে ঘাসও চাষ করেছেন তারা।
সোহেল-রিমা দম্পত্তির সাফল্যের পর আশপাশের অনেকেই খামার দেখতে আসেন; অনেকেই খামার সম্পর্কে পরামর্শ চান।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শতফুল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক নাজিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, সরকারের পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন ও শতফুল বাংলাদেশ ছাগল পালনে উদ্যোক্তা ও খামার তৈরিতে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছে। ছাগলের বাচ্চা কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে ছয় মাস লালন-পালন করলেই সাবলম্বী হতে পারেন খামারিরা। অনেকেই বছরে দুইবার করে বিক্রি করে অধিক লাভবান হচ্ছেন।
এ কাজে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানালেন তিনি।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, “রাজশাহীতে ছাগল পালনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে রাজশাহীতে শতাধিক ছাগল মোটাতাজা করার খামার রয়েছে। এ ছাড়া বাড়িতে দুই থেকে পাঁচটি পর্যন্ত ছাগল পালন করছে কৃষকরা।”
তিনি বলেন, এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় ছাগল লালন-পালন হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৭৭৫টি। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় এক লাখ বেশি।