Published : 14 Nov 2022, 12:07 AM
গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে কেক কেটে ও এক হাজার ৭৪টি মেমবাতি জ্বালিয়ে বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান লেখক হুমায়ূন আহমেদের ৭৪তম জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটে জন্মদিনের আয়োজন শুরু হয়। রাতে একে একে জ্বালানো হয় এক হাজার ৭৪টি মোমবাতি।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, রোববার ভোরে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার দুই সন্তান নিশাত ও নিনিতকে নিয়ে নুহাশপল্লীতে যান।
সকালে তিনি দুই সন্তান, নুহাশপল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারী, অসংখ্য হুমায়ূনভক্ত নিয়ে কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে লেখকের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। হোয়াইট হাউজের সামনে কাটা হয় কেক।
হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকার সময় যেভাবে জন্মদিন উদ্যাপন করতেন তার মৃত্যুর পর প্রতিবছর ঠিক সে ভাবেই প্রিয় লেখকের জন্মদিন উদ্যাপন হয়ে আসছে।
হুমায়ূন আহমেদের ৭৪তম জন্মদিনে মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলা সাহিত্যের শুদ্ধ চর্চার বিষয়ে জানি না, তবে বাংলা ভাষার শুদ্ধ চর্চা কমে গেছে।”
হুমায়ূন আহমেদের দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সর্বস্তরে শুদ্ধতম বাংলাভাষার চর্চা হোক এমনটা লেখক পরিবারের প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরের অনেক ধনী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে লেখা পড়া করছে। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ার কারণে বাচ্চাদের মধ্যে বাংলার একটি ভয় ঢুকে গেছে।
“বিশেষ করে করোনা মহামারীতে অনলাইনে ক্লাস করার কারণে অনেক শিশু মোবাইলের দিকে ঝুঁকে গেছে। বাধ্য হয়ে বাবা-মারাই শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছে। শিশুরা দিন দিন মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে করলেও এখন সেখান থেকে তাদের ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না।”
প্রতি বছর এদিনে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা বয়সী ভক্তরা ছুটে আসেন হুমায়ূন আহমেদের নিজের হাতে তৈরি নুহাশপল্লীতে। কবরে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা নুহাশপল্লীর বিভিন্ন স্থাপনা এবং নান্দনিক সৌন্দর্য ঘুরে দেখেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও নুহাশপল্লীতে আসেন তাদের প্রিয় লেখকের টানে।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায় তাকে সমাহিত করা হয়।