ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
Published : 06 Jul 2025, 12:16 AM
অনেক ব্যর্থ প্রচেষ্টা আর দীর্ঘ অপেক্ষার পর, ম্যাচের শেষভাগে রোমাঞ্চ তুঙ্গে উঠল। দিজিরে দুয়ের গোলে এগিয়ে যাওয়ার খানিক বাদেই ১০ জনের দলে পরিণত হলো পিএসজি। সুযোগ তৈরি হলো বায়ার্ন মিউনিখের সামনে। নির্ধারিত সময় শেষে আরও একজনকে হারাল ফরাসি দলটি। তখনও বেশ কয়েক মিনিটের খেলা বাকি। তবে, প্রতিপক্ষ শিবিরে দুইজন কম থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না বায়ার্ন, বরং গোল হজম করল আরেকটি। দারুণ জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠল ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
আটলান্টায় শনিবার কোয়ার্টার-ফাইনালে ২-০ গোলে জিতেছে লুইস এনরিকে দল। দুয়ের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর বদলি নেমে একেবারে শেষ সময়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন উসমান দেম্বেলে।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই ভালো সুযোগ পায় পিএসজি, কিন্তু দারুণ পজিশন থেকেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি দিজিরে দুয়ে। তিন মিনিট পর লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে বায়ার্ন, তবে মাইকেল ওলিসের শটে তেমন জোর ছিল না, ঝাঁপিয়ে রুখে দেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
২৭তম মিনিটে দোন্নারুম্মার দারুণ নৈপুণ্যে জাল অক্ষত থাকে পিএসজির। ফরাসি মিডফিল্ডার ওলিসের জোরাল শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান ইতালিয়ান গোলরক্ষক।
প্রথমে তিনটি লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেওয়া পিএসজি পরপর দুটি প্রচেষ্টা লক্ষ্যে রাখতে পারে। ৩২তম মিনিটে খাভিচা কাভারাৎসখেলিয়ার শট আটকে দেন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার। খানিক বাদে জামাল মুসিয়ালার প্রচেষ্টাও রুখে দলকে সমতায় রাখেন দোন্নারুম্মা।
বিরতির আগে পায়ে গুরুতর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বায়ার্নের তরুণ মিডফিল্ডার জামাল মুসিয়ালা।
৪৯তম মিনিটে ভাঙতে পারতো ডেডলক; কিন্তু মানুয়েল নয়ারের দুর্দান্ত সেভ হতাশ করে পিএসজিকে। ডি-বক্সে থেকে বার্কোলার কোনাকুনি শট ঠেকান জার্মান গোলরক্ষক।
অবশেষে ৭৮তম মিনিটে গোলের দেখা মেলে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের নিচু শটে কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান দুয়ে। শটে খুব বেশি গতি ছিল না, কিন্তু পিছলে যাওয়ায় আটকানোর চেষ্টাই করতে পারেননি নয়ার।
গত মাসের শেষ দিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে জোড়া গোল করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন দুয়ে। এবার এখানে দলকে পথ দেখালেন তরুণ ফরোয়ার্ড।
লড়াইয়ে তারপরও অবশ্য নাটকীয়তা বাকি ছিল। এগিয়ে যাওয়ার চার মিনিটের মধ্যে ১০ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। লেয়ন গোরেটস্কাকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার উইলিয়ান পাচো।
ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের শুরুতে আরেকটি জোর ধাক্কা হজম করতে হয় পিএসজিকে। প্রতিপক্ষের রাফায়েল গেররেরোর মুখে কনুই দিয়ে আঘাত করায় বহিষ্কান হন মিনিট দশেক আগে দুয়ের বদলি নামা ডিফেন্ডার লুকা এরনঁদেজ।
তবে পিএসজির আক্রমণাত্মক মনোভাবে এর তেমন একটা প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। তিন মিনিটের মধ্যে দেম্বেলের শট ক্রসবারে বাধা পায়। অবশ্য পরক্ষণেই হাকিমির পাস ধরে ব্যবধান বাড়ান বার্কোলার বদলি দেম্বেলে।
শেষ সময়ে ডি-বক্সে টমাস মুলারকে ট্যাকল করেন নুনো মেন্দেস, সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। বায়ার্নের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষীণ আশা জেগে ওঠে। তবে ভিএআর মনিটরে দেখে সিদ্ধান্ত পাল্টান রেফারি।
ম্যাচের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তাও তাতে কেটে যায়। ট্রেবল জয়ের মৌসুমে আরেকটি শিরোপা জয়ের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল পিএসজি।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা খেলবে রেয়াল মাদ্রিদ অথবা বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে।