এশিয়ান কাপ বাছাই
Published : 09 Jun 2025, 05:18 PM
‘সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হারলে আপনি চাকরি হারাতে পারেন’, এমনটা কি মনে হচ্ছে? এমন প্রশ্ন উঠতেই সংবাদ সম্মেলনে হাসির রোল পড়ে গেল। হাসলেন হাভিয়ের কাবরেরাও। বললেন, চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা অনুভব করছেন না তিনি। এর আগে-পরে নানা প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ কোচ পরিষ্কার করলেন নিজের লক্ষ্য। সিঙ্গাপুরকে যদিও তিনি মানছেন শক্তিশালী, তবে তাদের বিপক্ষে জেতাই তার একমাত্র চাওয়া।
ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। এ ম্যাচ সামনে রেখে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে দুই কোচই জানান দলীয় লক্ষ্য। সিঙ্গাপুর কোচ সুতোমু ওগুরা বললেন, ‘ভালো ম্যাচ’ খেলতে চান তারা। জয়ই একমাত্র চাওয়া কাবরেরার।
চাওয়া পূরণ খুব সহজও নয় বাংলাদেশের জন্য। স্বীকৃতি ম্যাচে দলটির বিপক্ষে কোনো জয়ের গল্প নেই। ১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপে ১-১ ড্র, ২০১৫ সালের দেখায় ২-১ গোলে হেরেছিল দল। এর বাইরে আনঅফিসিয়াল ম্যাচে ১৯৭৩ সালেই সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলের জয় ও দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে হার সঙ্গী হয়েছিল। এছাড়া ২০০৭ সালে মারদেকা কাপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশের অনূর্ধ্ব-২৩ দল।
১০ বছর পর ফের দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে। ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ উজ্জীবিত বাংলাদেশ। মালদ্বীপকে প্রীতি ম্যাচে ৩-১ ব্যবধানে উড়িয়ে এসেছে সিঙ্গাপুরও। দলটির আক্রমণভাগে আছে ইখসান ফান্দির মতো নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড। প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং লাইনআপের প্রশংসা করলেও নিজ দলের প্রতি আস্থা অটুট কাবরেরার।
“সিঙ্গাপুর শক্তিশালী দল। যেটা আমি আগেও বলেছি, তাদের দারুণ সামর্থ্য আছে, বিশেষ করে আক্রমণভাগে তাদের বেশ কয়েকজন সামর্থ্যবান খেলোয়াড় আছে, যাদের বিপক্ষে রক্ষণ আগলে রাখা, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না।”
“কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এই ম্যাচের জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি এবং দলকে সিঙ্গাপুরের বিষয়ে সঠিক তথ্য এবং তাদের বিপক্ষে করণীয়গুলো বাতলে দিয়েছি। তারা শক্তিশালী দল এবং বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল হলেও আবারও বলছি, আমরা বিশ্বাস করি, আগামীকাল আমরা পারব। আমরা তিন পয়েন্ট পেতে পারি।”
বাছাইয়ে সবশেষ ম্যাচে ভারতের সাথে গোলশূন্য ড্র করে আসা, ভুটানকে কদিন আগে প্রীতি ম্যাচে হারানো, হামজা চৌধুরী, সোহেল রানার গোল পাওয়া, কানাডা লিগে খেলা শোমিত সোম এবং ইতালির সেরি ‘ডি’তে খেলা ফাহামিদুল ইসলামের যোগ হওয়া- সব মিলিয়ে কাবরেরা আগের চেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী।
“প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। যদিও সেটা খুবই অল্প সময়, কিন্তু সত্যি বলতে, এই সময়ের মধ্যে আমরা সব দিক নিয়ে কাজ করেছি। ভুটানের বিপক্ষে ভালো একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, যেটাতে জেতায় আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে, মানসিকভাবে আরও দৃঢ় হয়েছি। এখন আগামীকাল বড় একটা ম্যাচ, আমরা এই চ্যালেঞ্জের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।”
“আমি মনে করি, এটা খুব-খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। অবশ্যই সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট পাওয়া। কেননা, কেবল জয়ই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই গ্রুপের চার দলের মধ্যে শীর্ষে থাকা দলটিই পাবে বাছাই পেরুনোর সুযোগ।”
এ মুহূর্তে ১ করে পয়েন্ট গ্রুপের চার দলেরই। মঙ্গলবার গ্রুপের অন্য ম্যাচে হংকংয়ের মুখোমুখি হবে ভারত। আপাতত সিঙ্গাপুর ম্যাচ ভাবনায় থাকলেও কাবরেরার দৃষ্টি বাছাইয়ের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত।
“বর্তমানে আমরা কেবল আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। এই ম্যাচের পরিকল্পনা প্রস্তুত করছি এবং আমরা বিশ্বাস করি, এ ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া চলতে না। ম্যাচটা জেতার জন্য প্রতিপক্ষকে আমাদের চাপ দিতে হবে। সেই সাথে আমাদের দীর্ঘমেয়াদে দৃষ্টি দিতে হবে যে, আমরা আসলেই বাছাই পেরুনোর মান আমাদের আছে এবং দেখাতে হবে, আমরা আসলেই বাছাইয়ের শেষ পর্যন্ত যেতে পারি।”