চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
Published : 01 Jun 2025, 04:49 PM
শিরোপা লড়াইয়ের আগে অনেকের ভাবনাতেই হয়তো কিছুটা পিছিয়ে ছিল ইন্টার মিলান। শক্তি-সামর্থ্য আর সম্ভাবনার বিচারে পিএসজির সঙ্গে তাদের ব্যবধান যদিও খুব বেশি ছিল না। কিন্তু মাঠের লড়াই শুরু হতেই যেভাবে সবকিছু একপেশে হয়ে উঠল, যেমন কোণঠাসা হয়ে পড়ল ইতালিয়ান দলটি, তাতে অবাক হওয়ার উপকরণ আছে যথেষ্ট। দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি যেমন বলছেন, মাঠে নিজের দলকে তিনি যেন চিনতেই পারেননি।
মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শনিবার রাতের ফাইনালে প্রতিপক্ষের ওপর পুরোটা সময় আধিপত্য করে ৫-০ গোলে জিতে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের উৎসব শুরু করে পিএসজি।
আশরাফ হাকিমির গোলে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পর দুই অর্ধে একটি করে গোল করেন তরুণ ফরাসি ফরোয়ার্ড দুয়ে। পরে বাকি দুটি গোল করেন খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া ও সেনি।
শিরোপার মঞ্চে ইন্টারের এভাবে ধরাশায়ী হতে দেখে তাই প্রশ্ন উঁকি দেয়, এই দলটিই কি সেমি-ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে অমন অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করেছিল? কাতালান দলটির বিপক্ষে দুই লেগের মহাকাব্যিক লড়াইয়ে ৭-৬ গোলে জিতে যারা ফাইনালে উঠল, সেই দলেরই এমন তাসের ঘরের মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়া মানতেই পারছেন না ইনজাগি।
“সত্যি মনেই হয়নি যে, আমার ইন্টার মাঠে খেলছে… আর এই বিষয়টা নিশ্চিতভাবে খেলোয়াড়রাই প্রথম অনুধাবন করেছে।”
ইউরোপের শীর্ষ প্রতিযোগিতার ফাইনালের ইতিহাসে এত বড় জয় আগে কোনো দল পায়নি। এর আগে সর্বোচ্চ ৪ গোলের ব্যবধান দেখা গিয়েছিল চারবার; ১৯৬০ সালে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে রেয়াল মাদ্রিদ ৭-৩ গোলে, ১৯৭৪ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখ ৪-০ গোলে, ১৯৮৯ সালে স্টেউয়া বুকুরেস্টি ও ১৯৯৪ সালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতেছিল এসি মিলান।
এবারের শিরোপা লড়াইটি কতটা একতরফা হয়েছে, তার প্রমাণ স্কোরলাইনের পাশাপাশি মিলছে অন্যান্য পরিসংখ্যানেও। প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে পিএসজি গোলের জন্য ২৩ শট নিয়ে আটটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। বিপরীতে ইন্টারের আট শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে, অবশ্য সেগুলোও তেমন ভীতি ছড়াতে পারেনি।
ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষের শ্রেষ্টত্ব মেনে তাদের অভিনন্দন জানাতে ভুল করলেন না ইনজাগি।
“আমার মতে, পিএসজিই এই (শিরোপা) জয়ের যোগ্য।”
“দলের মধ্যে এখন তীব্র হতাশা ছেয়ে গেছে, মনে তিক্ততা ভর করেছে, কারণ এই মৌসুমে ছেলেরা দারুণ খেলেছে, এরপরও খালি হাতে মৌসুম শেষ করাটা কষ্টের। কোচ হিসেবে আমি এখনও গর্বিত। আজকের ম্যাচটা নিয়ে অবশ্যই আমরা সন্তুষ্ট নই… সেরা উপায়ে আমরা ফাইনালে খেলতে পারিনি, তারপরও ছেলেদের আমি ধন্যবাদ জানাই।”
৩৮ তিন আগেও ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনা ছিল ইন্টার মিলানের সামনে। কিন্তু, ইতালিয়ান কাপ ও সেরি আয় পরাজয়ের পর এখানে ধরাশায়ী হয়ে খালি হাতে মৌসুম শেষ হচ্ছে দলটির।
তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হারল ইন্টার। ২০২২-২৩ আসরের শিরোপা লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে হেরেছিল তিনবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
সবশেষ ২০০৯-১০ মৌসুমে জোসে মরিনিয়োর কোচিংয়ে ইউরোপের মুকুট পরেছিল ইন্টার, চতুর্থ শিরোপার অপেক্ষা আর শেষই হচ্ছে না ক্লাবটির।
পিএসজির ঐতিহাসিক রাতে আরও যত রেকর্ড ও কীর্তি
এনরিকের প্রয়াত মেয়েকে পিএসজি সমর্থকদের শ্রদ্ধাঞ্জলি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় উদযাপনে উন্মত্ত পিএসজি সমর্থকরা, এলো মৃত্যুর